Onlooker desk: ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পশ্চিম ইউরোপের বিস্তীর্ণ এলাকা। জার্মানি, বেলজিয়াম এবং আশপাশের কয়েকটি দেশ বানভাসি। এই ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৫০-র কাছাকাছি মানুষ মারা গিয়েছেন। এখনও অনেকে নিখোঁজ। আশ্রয়হীনের সংখ্যাও বহু। গুরুত্বপূর্ণ অনেক এলাকাতেই যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন।
বেশ ক’দিন ধরে ওই এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়। তার জেরেই এই বন্যা। জার্মানির নর্থ রাইন-ওয়েস্টফ্যালিয়া এবং রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট এলাকায় প্রবল বন্যা হয়। বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ডসেরও অনেকটা এলাকা ডুবে যায় জলে। কেবল জার্মানিতেই মারা গিয়েছেন ১০৩ জন। কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জার্মানিতে গত ৬০ বছরে এত মানুষ মারা যাননি।
মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয় একটি হোমের ১২ আবাসিকের। তাঁদের সকলেই বিশেষ ভাবে সক্ষম। রাতের অন্ধকারে বন্যার জল আছড়ে পড়ে। কিছু বোঝার ওঠার আগেই তাঁদের ভাসিয়ে নিয়ে যায় বলে মনে করা হচ্ছে।
রাস্তা, বাড়িঘর সম্পূর্ণ ভাবে জলের তলায়। গাড়ি পড়ে রয়েছে উল্টে। যে সব জায়গা থেকে বন্যার জল নেমেছে, সেখানে কাদার মধ্যে সর্বত্র ছড়ানো বিপর্যয়ের চিহ্ন। বেশ কিছু জেলা এখনও সম্পূর্ণ যোগাযোগহীন। জলের তলায়। টেলিফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদি সব বিচ্ছিন্ন।
বেলজিয়ামে বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০ জন। আরও কমপক্ষে ২০ জনের খোঁজ মিলছে না। একটি এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। সেখানে আছেন ২১ হাজারেরও বেশি মানুষ। দেশের ১০টি প্রদেশের চারটিতে উদ্ধারকার্যে সেনা নামানো হয়েছে।
পরিস্থিতি সঙ্কটজনক প্রতিবেশী নেদারল্যান্ডসেও। লিমবার্গ প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া। বন্যার জল বিপদসীমা ছাড়ানোয় তাঁদের বাড়ি ছেডে় অন্যত্র আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। আপৎকালীন পরিষেবার সঙ্গে জড়িত কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। যে সব অঞ্চলে বন্যার জল বাড়ছে, সেখানে বাঁধ দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ।
দেশের দক্ষিণভাগের মাস্ত্রিশত শহর থেকে জল নামছে। সেখানে অবশ্য বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। অন্যদিকে, ভ্যালকেনবার্গ শহরে প্রভূত ক্ষতক্ষতি হয়েছে। তবে কেউ আহত হননি, মৃত্যুর খবরও নেই। সীমান্ত শহর মাসেইকে বালির বাঁধ পেরিয়ে ঢুকেছে মিউজ নদীর জল।
জার্মানিতে ক্ষয়ক্ষতি কয়েক বিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিসংখ্যান জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জার্ড ল্যান্ডসবার্গ। তিনি জার্মান অ্যাসোসিয়েশন অফ টাউনস অ্যান্ড মিউনিসিপ্যালিটিজের প্রধান।
২০০২ সালে এলব নদীর জলে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল জার্মানিতে। সেই সময় জার্মানিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২১ জন। মধ্য ইউরোপে মারা গিয়েছিলেন ১০০ জন। সংবাদমাধ্যম সেই বিপর্যয়কে ‘শতকের অন্যতম ভয়াবহ বন্যা’ আখ্যা দিয়েছিল।
Theonlooker24x7.com–র সব খবরের নিয়মিত আপডেট পেতে লাইক করুন ফেসবুক পেজ ও ফলো করুন টুইটার।