Onlooker desk: ‘এক বিশ্ব এক স্বাস্থ্য’ নীতির পক্ষে জি৭ বৈঠকে সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আন্তর্জাতিক স্তরে স্বাস্থ্য পরিচালনা ও প্রশাসনের ক্ষেত্রে একজোটে কাজের প্রতি দেশের সমর্থনও জানিয়েছেন তিনি। শনিবার জি৭-এর প্রথম আউটরিচ সেশনে ভার্চুয়ালি বক্তৃতা দেওয়ার সময় এই আশ্বাস দেন মোদী। পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ভারতের দিকে যে ভাবে বিভিন্ন দেশ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, সে জন্য ধন্যবাদও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বছর জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে দেশে করোনায় ২ লক্ষের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। সেই সময়ে গোটা দেশে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর অভূতপূর্ব খারাপ দশা প্রকট হয়। একদিকে হাসপাতালে শয্যার অভাব, অন্যদিকে অক্সিজেন পেতে নাকাল মানুষ। অ্যাম্বুল্যান্স চেয়ে হন্যে হয়ে ঘোরা। এরই মধ্যে ভ্যাকসিনের টানাটানি। দেশ যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় মোটেই প্রস্তুত ছিল না, সেটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে মানুষের নিদারুণ ভোগান্তিতে। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকা উৎপাদক দেশ ভারতকেই অন্য দেশের কাছে ভ্যাকসিনের জন্য হাত পাততে হয়। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা, কানাডা-সহ অনেক দেশ অক্সিজেন সিলিন্ডার, রেগুলেটর ইত্যাদি পাঠিয়ে ভারতের পাশে দাঁড়ায়। সেই জন্যই মোদী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে একটি সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
সেখানে আরও জানানো হয়, ভারতের মতো দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের মাত্রা বৃদ্ধিতে টিকার কাঁচামাল ও অন্যান্য উপাদানের জোগান অব্যাহত রাখার প্রক্রিয়াকেও স্বাগত জানান তিনি।
‘বিল্ডিং ব্যাক স্ট্রংগার হেল্থ’ নামে ওই সেশনে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য অতিমারী থেকে সেরে ওঠা এবং অদম্য ভাবে তার মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রী সেখানে সামগ্রিক ভাবে সমাজের সব ক্ষেত্রের মিলিত প্রয়াসে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেন। সরকার, শিলক্ষেত্র এবং সাধারণ নাগরিক — সকলের যৌথ উদ্যোগে এই অতিমারীর মোকাবিলায় জোর দেন মোদী। জি৭ এর সদস্য দেশ না হলেও গুডউইল পার্টনার হিসাবে ২০১৯-এও আমন্ত্রণ পেয়েছিল ভারত।
তবে মোদী যতই অতিমারী মোকাবিলায় ভারতের সামগ্রিক উদ্যোগ নিয়ে সরব হোন। আগের বার করোনার সংখ্যা কমে আসার পর তিনি যে হাবভাব দেখিয়েছিলেন, তা এখনও স্মরণে। সম্প্রতি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন কারও নাম না করে মন্তব্য করেছেন, ‘মনে হয়েছিল, এই অতিমারীর হাত থেকে একা ভারতই গোটা পৃথিবীকে বাঁচিয়ে দেবে।’ বিষয়টা যে মোটেই তেমন ছিল না, সেটা এখন আর গোপন নেই।
তার মধ্যে সম্প্রতি ‘দ্য ইকনমিস্ট’ একটি আর্টিকলে জানিয়েছে, ভারতের মোট করোনা মৃত্যু সরকারি পরিসংখ্যানের ৫ থেকে ৭ গুণ বেশি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক অবশ্য কোনও প্রকাশনার নাম না করেই এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছে।
কিন্তু এতকিছুর পরেও মোদী বদলাননি। জি৭ বৈঠকেও তিনি জানিয়েছেন, কেউ চাইলে অতিমারী মোকাবিলায় তাঁদের ‘অভিজ্ঞতা ও বিচক্ষণতা’ কাজে লাগাতে পারে!
জি৭ বৈঠকে ‘এক বিশ্ব এক স্বাস্থ্য’ নীতিতে জোর মোদীর
