Onlooker desk: কোভিডে তার মৃত্যু হবে। কিন্তু তা হলে তার মৃত্যুর পরে পাঁচ বছরের সন্তানকে দেখবে কে? এই আশঙ্কা থেকে ওই শিশুকে ১৫ বার কুপিয়ে খুন করেছিল মা। নিজেকেও গুরুতর ভাবে আহত করেছিল সে। লন্ডনে নিজেদের ফ্ল্যাটে এই ঘটনা ঘটায় বছর ৩৬-এর সুতা শিবনন্থম। সেটা গত বছরের ৩০ জুন।
সুতার স্বামী জানিয়েছেন, সর্বক্ষণ কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছিল সে। তার উপরে লকডাউন ও বিধিনিষেধ তাকে কার্যত খাদের কিনারায় ঠেলে দেয়। সে কারণেই পাঁচ বছরের সন্তান সায়গিকে এ ভাবে সে হত্যা করেছিল সুতা।
বৃহস্পতিবার ওল্ড বেলিতে ওঠে তার মামলা। খুনের কথা অস্বীকার করলেও কোপ মারার কথা স্বীকার করেছে সে। এতে অপরাধের ভার কিছুটা লঘু হয়। জেলের বদলে অনির্দিষ্টকালের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে অভিযুক্তকে। তার মানসিক চিকিৎসা হবে।
২০০৬-এ বাড়ির লোক দেখাশোনা করে বিয়ে দেন সুতার। সেই থেকে ইংল্যান্ডেই থাকে সে। ঘটনার এক বছর আগে থেকে রহস্যজনক অসুখে ভুগতে শুরু করে সুতা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তার সব সময়ই মনে হতো, সে ভয়াবহ কোনও অসুখে ভুগছে। কিছুদিনের মধ্যেই মারা যাবে।
যে দিন ঘটনাটি ঘটে, সে দিন সে স্বামীকে কাজে না-যাওয়ার জন্য বহুবার অনুরোধ করে। জানায় তার শরীর ভালো নেই। স্বামী যেন বন্ধুদের ফোন করে সে কথা জানান।
বিকেল ৪টে নাগাদ মিশ্যামে মনার্ক প্যারেডে সুতাদের ফ্ল্যাটে যান প্রতিবেশীরা। গিয়ে দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছে সায়গি। গলা, বুক, পেটে বারবার কোপ মারার চিহ্ন। সুতার পেটেও আঘাতের চিহ্ন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা চলে সুতার। সুস্থ হওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় তাকে।
সুতার স্বামী সুগন্থন সেইনসবেরির কর্মী। সুপারমার্কেটে ডেকে সে দিন এই ভয়াবহ ঘটনার কথা জানানো হয়। বৃহস্পতিবার স্ত্রীর সাজা ঘোষণার সময় আরও একবার ওই ঘটনার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাঁকে। আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সুগন্থন বলেন, ‘সুখী পরিবার ছিল আমার। কোনও কিছুর অভাব ছিল না। কিন্তু ওই ঘটনার পরে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়েছে। এখন প্রতিটি দিনই স্ট্রাগল।’ স্ত্রীর সঙ্গে এতদিন কথা হয়নি সুগন্থনের। তবে এই ঘটনার জন্য স্ত্রী-ই যে দোষী, সে কথা স্বীকার করে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি, সুস্থ থাকলে ও আমাদের সন্তানকে মারতে পারত না।’
সুতার চিকিৎসা করেছেন, এমন এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জানান, জটিল মানসিক সমস্যায় ভুগছেন ওই যুবতী। কোভিডের লকডাউন ও সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার চাপ সে নিতে পারেনি। মানসিক স্বাস্থ্য আইনের ৩৭ ও ৪১ নম্বর ধারায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে তাকে।
হতাশায় সন্তানকে ১৫ বার কোপ ভারতীয় যুবতীর, হাসপাতালে পাঠাল লন্ডনের আদালত
