Onlooker desk: প্রবল বৃষ্টির জেরে গত সপ্তাহান্তের ধসের জের এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি জাপান। একটি সূত্রের খবর, অন্তত ৮০ জনের খোঁজ মিলছে না। অন্য একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যাটা ১১৩। তাঁদের জন্য তল্লাশি চালাচ্ছেন হাজার দেড়েক উদ্ধারকারী। কাদার স্তূপ সরিয়ে নিখোঁজদের সন্ধানে চলছে চিরুনি তল্লাশি।
গত সপ্তাহের শেষে প্রবল ভারী বৃষ্টি হয় জাপানের একাংশে। জুলাই মাসে ২৪ ঘণ্টায় সাধারণত যত বৃষ্টিপাত হয়, তার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি বৃষ্টি হয়েছে গত সপ্তাহের শেষে। তার জেরে একাধিক ধস নামে সমুদ্র তীরবর্তী আতামি শহরে।
টোকিওর থেকে আতামির দূরত্ব বেশি নয়। রাজধানী শহরের ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে তার অবস্থান।
ধসে শহরের রাস্তা দিয়ে প্রচুর কাদা-পাথরের স্রোত বয়ে যেতে দেখা যায়। এ পর্যন্ত অন্তত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ৮০ জনের কাছাকাছি নিখোঁজ। তাই মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা।
ধসের বর্ণনা দিতে গিয়ে শিউরে উঠছেন আতামির বাসিন্দারা। প্রায় সকলেই জানাচ্ছেন, এমন কিছু যে ঘটতে পারে, সেটা তাঁদের দুঃস্বপ্নেও ছিল না।
ধসে ঘরছাড়া বছর ৭৫-এর এক বৃদ্ধ জানান, তাঁদের পাশের বাড়িটা মুহূর্তে ভেসে গেল। যে দম্পতি সেখানে থাকতেন, তাঁদের হদিস নেই। তিনি বলেন, ‘নরক দেখে নিলাম!’
সপ্তাহান্ত থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে সোমবার উদ্ধারকারীর সংখ্যা দেড় হাজারে পৌঁছয়। তা আরও বাড়তে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে থাকা যত বেশি সংখ্যক মানুষকে সম্ভব উদ্ধারের চেষ্টা করছি আমরা।’ তিনি জানান, উদ্ধারকারী দলে রয়েছেন পুলিশ, দমকল এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
জাপানের একটি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজ অন্তত ৮০ জন্য। অন্যদিকে, এক সরকারি মুখপাত্র হিরোকি ওনুমা একটি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছিলেন, ১১৩ জনের খোঁজ মিলছে না। তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তল্লাশি অভিযান এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
এ পর্যন্ত স্বজনের খোঁজে ফোনে যোগাযোগের ভিত্তিতে নিখোঁজের হিসাব করা হচ্ছিল। কিন্তু এ বার সরকারি নথির ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে তালিকা। যে কারণে হদিসহীন মানুষের সংখ্যা সোমবার অনেকখানি বাড়ে।
গত শনিবার সকালের ধসে আথামিতে অন্তত ১৩০টি বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। জল, কাদা ও ধ্বংসস্তূপ সব গিয়ে একটি নদীতে পড়ে ২ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রে মিশেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
চিফ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি কাটসুনোবু কাটো আশপাশের বাসিন্দাদের সতর্ক করেছেন। তিনি জানান, মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেও বিপদ হতে পারে।
বর্তমানে আতামিতে বৃষ্টি থেমেছে। তবে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তাই ধসের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ধসে বিপর্যস্ত জাপানের আতামি, কাদার স্তূপ সরিয়ে চলছে নিখোঁজদের উদ্ধারকাজ
