Onlooker desk: আম-সূত্রয় যোগসূত্র স্থাপনের পাকিস্তানি কূটনীতি বিশেষ সাড়া ফেলতে পারল না। আমেরিকার পাশাপাশি ‘বন্ধু’ চিনও খানিক নিরাশই করল ইসলামাবাদকে। পাকিস্তানের পাঠানো আমের পেটি নিতে দুই দেশই অস্বীকার করেছে করোনাভাইরাসের কড়া বিধিনিষেধের যুক্তি দেখিয়ে।
একটি সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, পাকিস্তানের ফরেন অফিস গত বুধবার ৩২টিরও বেশি দেশে আমের পেটি পাঠায়। কিন্তু অনেকের পাশাপাশি আমেরিকা ও চিনও তা নিতে অস্বীকার করে। একটি সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে ওই সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, কানাডা, নেপাল, মিশর এবং শ্রীলঙ্কাও দুঃখপ্রকাশ করে ফেরত পাঠিয়েছে পাকিস্তানের আম-দান।
কিন্তু চিনের প্রত্যাখ্যানই সবচেয়ে লক্ষ্যণীয়। কারণ ১৯৬০-এ যখন দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সখ্য স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন এই মিষ্টি-রসালো ফলই সম্পর্ককে অনেকখানি মধুর করতে সাহায্য করেছিল। ১৯৬৮-র অগস্টে চেয়ারম্যান মাও জেদং-কে পাকিস্তানের তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী মিয়াঁ আরশাদ হুসেন পাঠিয়েছিলেন আমের পেটি। এই ফল দু’দেশের সেতুবন্ধনে ‘আম’ভূমিকা নেয়নি। যথেষ্টই ‘খাস’ ছিল সে। গরমে পচে যাওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা মাও দেশের সর্ব প্রান্তে পাঠাতেন পাকিস্তানের আম। অথচ ১৯৬০-এর আগে এই ফলের কথা চিন সে ভাবে জানতই না।
সূত্রের খবর, এ বার পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ডঃ আরিফ আলভির তরফে চৌসা আম উপহার পাঠানো হয় বিভিন্ন দেশে। বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত লোকজন জানিয়েছেন, ৩২টি দেশে তা পাঠানো হলেও আরও কয়েকটি রাষ্ট্রে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেগুলি হলো — ইরান, গাল্ফ দেশগুলি, তুরস্ক, ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং রাশিয়া। আম-সূত্রের তালিকায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাক্রঁ থাকলেও প্যারিস এ ব্যাপারে যোগাযোগের উত্তর দেয়নি বলে জানাচ্ছে সংবাদমাধ্যম।
এবং এই তালিকায় থাকে না নেই ভারত। বস্তুত, নয়াদিল্লির সঙ্গে ইসলামাবাদের এই আম-কূটনীতি বেশ পুরোনো। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তখনকার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটন বিহারী পাজপেয়ী এবং কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে আম পাঠিয়েছিলেন। দু’দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যেই এই উপহার। এক সূত্রের কথায়, ‘মোদীকেও সরকারি চ্যানেলে আম পাঠানো হয়েছে। আর এ দিকে পাকিস্তান অভিযোগ করছে, আমরা ওদের আকাশে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালাচ্ছি।’
এ বার চৌসা পাঠালেও আগে আনোয়ার রত্তোল এবং সিন্ধেরি আমও পাঠাত পাকিস্তান। কিন্তু সেই দুই প্রজাতিকে এ বার বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘ফলের রাজা’ আম মূলত ভারত উপমহাদেশেরই ফসল। এর বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাগনিফেরা ইন্ডিকা। ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশেরই জাতীয় ফল হলো আম। তবে এর সর্বাধিক উৎপাদন হয় ভারতে। দেশে প্রায় ১২০০ প্রজাতির আমের চাষ হয়। পাকিস্তানে সে জায়গায় চারশো প্রজাতির ফলন।
অজুহাত করোনা, পাকিস্তানের পাঠানো উপহার আম প্রত্যাখ্যান করল চিনও
