Onlooker desk: এ দেশের মরু রাজস্থানের তাপমাত্রা কানাডায়! প্রবল গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সেখানে। তাপমাত্রা ৫০ ছুঁইছুঁই।
এর জেরে বহু মানুষের মৃত্যুর খবরও মিলছে। গত শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত ভ্যাঙ্কুভার এলাকায় অন্তত ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সিটি পুলিশ ও রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে।
কেবল ভ্যাঙ্কুভার পুলিশ ডিপার্টমেন্টই জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে ৬৫টি আচমকা মৃত্যুর খবর মিলেছে। যার বেশিরভাগই অতিরিক্ত তাপের কারণে।
মঙ্গলবার কানাডার লিটন এলাকায় এলাকার তাপমাত্রা ছিল ৪৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুলিশ সার্জেন্ট স্টিভ অ্যাডিসন বলেন, ‘ভ্যাঙ্কুভারে এ রকম গরম আগে কোনওদিন দেখিনি। দুর্ভাগ্যবশত, বহু মানুষ এর জেরে মারাও যাচ্ছেন।’
অন্যান্য মিউনিসিপ্যালিটি এলাকাতেও বেশ কিছু আচমকা মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। তবে তারা এখনও সংখ্যা জানায়নি।
উষ্ণায়নের প্রভাব থেকে কোনও দেশই নিস্তার পাচ্ছে না। ২০১৯ পর্যন্ত দশকটি ছিল আন্তর্জাতিক ভাবে উষ্ণতম দশক। বিশ্ব রেকর্ড অনুযায়ী সবচেয়ে উষ্ণ পাঁচটি বছর গত পাঁচ বছরের মধ্যেই পড়েছে।
একটি হাই প্রেশার রিজের কারণে কানাডায় এই প্রবল গরম বলে জানানো হচ্ছে। মার্কিন রাজ্য ওরেগন থেকে কানাডার আর্কটিক অঞ্চলে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি লক্ষ করা গিয়েছে।
পোর্টল্যান্ড, ওরেগন অ্যান্ড সিয়াটল, ওয়াশিংটনের মতো শহরেও তাপমাত্রা রেকর্ড ছুঁয়েছে। ১৯৪০ থেকে তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা হচ্ছে। এ পর্যন্ত এত গরম দেখা যায়নি।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার (ভ্যাঙ্কুভার এর মধ্যেই পড়ে) চিফ করোনারও এ কথা জানিয়েছে। বিবৃততে লেখা হয়েছে — প্রবল গরমের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গিয়েছে। গত শুক্রবার থেকে সোমবারের মধ্যে ২৩৩ জন মারা গিয়েছেন। যা সাধারণ চারদিনের গড় মৃত্যুর চেয়ে অন্তত ১০০ বেশি।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রিমিয়ার জন হরগ্যান বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতার নিরিখে এটাই উষ্ণতম সপ্তাহ। এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। পরিবার এবং সমাজ, দু’ক্ষেত্রেই এর প্রভাব ভালো হচ্ছে না।’ এই পরিস্থিতিতে সকলকে সকলের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন প্রিমিয়ার।
কানাডার পরিবেশ মন্ত্রক বেশ কিছু এলাকার জন্য সতর্কতা জারি করেছে। তারা জানিয়েছে, এই তাপ গোটা সপ্তাহ জুড়ে চলবে।
ইউএস ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসও একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাড়িতে থাকা বা বাড়ির বাইরে খুব ভারী কাজ না-করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রচুর জল খাওয়া, পরিবারের সকলের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার কথাও বলা হয়েছে।
পরিস্থিতি এমনই যে ভ্যাঙ্কুভারে স্কুল ও টিকাকরণ কেন্দ্র পর্যন্ত গরমের জেরে বন্ধ। সরকার রাস্তার ধারে অস্থায়ী ফোয়ারা তৈরি করেছে। পোর্টেবল এসি এবং ফ্যানের চাহিদা হুহু করে বাড়ছে। যাঁদের বাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই, তাঁরা গাড়ির এসি চালিয়ে ঘুমোচ্ছেন।
প্রবল গরম ও খরা পরিস্থিতিতে আগুন লাগার ঘটনাও বাড়ছে। ক্যালিফোর্নিয়া-ওরেগন সীমানায় বিধ্বংসী আগুনে ইতিমধ্যেই ১৫০০ একর জমি পুড়ে গিয়েছে।
৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় জেরবার কানাডা, মারা যাচ্ছেন বহু মানুষ
