প্রকাশ বসু
না, হাল্লা রাজার সেনা নন। এঁরা হলেন ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) সমর্থক।
আদি অকৃত্রিম সমর্থক। শুধু লালের বদলে লাল-হলুদ যাঁদের রক্তে। তা না হলে, আজকের পেশাদার যুগে কাজকর্ম ফেলে কেউ ছুটে যান ময়দানের ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) তাঁবুতে! রোদ-বৃষ্টি এবং অবশ্যই করোনা উপেক্ষা করে। তবু আট থেকে আশি, বাড়ির মা-বোন থেকে অনেক পেশার অনেক মানুষ সে দিন ছুটে এসেছিলেন লাল-হলুদ তাঁবুর সামনে। পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন, পুলিশের তাড়া খেলেন, গ্রেপ্তারও হলেন।
কিন্তু কেন?
ক্লাব অন্ত প্রাণ সমর্থকরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নামলেন। উদ্দেশ্য একটাই, কেটে যাক এই অচলাবস্থা। কিন্তু তাতে রাজাদের কী এল গেল? রাজা মানে দু’পক্ষই। এক, ক্লাবের শাসকগোষ্ঠী অর্থাৎ দেবব্রত (নীতু) সরকারের মতো কর্তারা। দুই, ইনভেস্টর অর্থাৎ শ্রী সিমেন্ট।
দীর্ঘ দিন ধরে লড়াইটা হয়ে আসছে। চুক্তি নিয়ে। কে ভুল কে ঠিক, তা নিয়ে লড়াই শোনা গেল। কই, কোনও পক্ষ তো ফুটবল বা ফুটবলারদের নিয়ে কিছু বললেন না। কেউ তো বুক বাজিয়ে সমর্থকদের বললেন না, ‘আমাদের অভ্যন্তরীণ ঝামেলা যাই হোক না কেন, আমরা সেরা দলই গড়ব। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন।’
রোজ মিডিয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে যায় কর্তা বনাম ইনভেস্টর ঝগড়ায়। খেলার কথা নেই। শুধুই কাদা ছোড়াছুড়ি। কিছু সমর্থকও দু’ভাগে বিভক্ত। শুনতে খারাপ লাগলেও এটা সত্যি যে, সে দিনের ঝামেলার পুরোভাগে দুটো গোষ্ঠীর সমর্থকদেরই সিংহভাগ মানুষ ছিলেন।
যাঁরা সত্যিকারের লাল হলুদকে মায়ের মতো দেখেন, যাঁরা বাবার মুখাগ্নির পরও গ্যালারিতে ‘জয় ইস্টবেঙ্গল’ (East Bengal) ধ্বনি তোলেন, তাঁরা কিন্তু থেকে গেলেন সেই তিমিরেই। রোজ রোজ মোহনবাগান সমর্থকদের টিপ্পনি হজম করতে হয়। চোখের জলও পড়ে অন্তরালে। কিন্তু ক্লাবের বাবুদের কি সেই নিয়ে হুঁশ আছে! তাঁরা তো চুক্তি নিয়েই ব্যস্ত।
বেশ হয়, যদি কোনও গুপী-বাঘা এসে হাল্লা রাজা থুড়ি লাল হলুদ কর্তা আর কর্পোরেট বাবুদের ঝামেলাটা মিটিয়ে দেয়। তা হলে আবার গ্যালারিতে পতপত করে উড়বে লাল হলুদ পতাকা। ময়দান মুখরিত হবে ‘গোওল’ চিৎকারে।
সমর্থকদের মুখ চেয়ে এ বার হানাহানিটা বন্ধ করে মাঠে কি বল গড়ানো যায় না?
Theonlooker24x7.com–র সব খবরের নিয়মিত আপডেট পেতে লাইক করুন ফেসবুক পেজ ও ফলো করুন টুইটার।