Onlooker desk: ‘ডিজওবিডিয়েন্স ইজ দ্য ট্রু ফাউন্ডেশন অফ লিবার্টি। দ্য ওবিডিয়েন্ট মাস্ট বি স্লেভস।’ বলেছিলেন দার্শনিক-সাহিত্যিক হেনরি ডেভিড থোরু।
আজ, ৩ জুলাই ডিজওবিডিয়েন্স ডে। বলা যায়, অমান্য দিবস। অবাধ্যতা বলা যেতেই পারত। তবে অবাধ্যতার মধ্যে এক ধরনের উৎশৃঙ্খলতা রয়েছে। আর অমান্যের মধ্যে রয়েছে স্পর্ধা, প্রশ্ন করার, রুখে দাঁড়ানোর সাহস। তাই একে বিশ্ব অমান্য দিবসই বলি।
এর দর্শনটা সরল। একটা দিন নিয়মের চোখরাঙানির বাইরে গিয়ে একটু ঝাড়া হাত-পা হয়ে বাঁচা। চারপাশে বস, অফিস, সরকার বাহাদুর থেকে সমাজের নানাবিধ নিয়ম। মানতে মানতে হা-ক্লান্ত মন একটু নিস্তার তো চায়ই। সেই চাওয়াকে মান্যতা দিতেই এই বিশ্ব অমান্য দিবস। ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও’ বলার দিন।
কিন্তু এমন একটা দিনের জন্ম হলো কী ভাবে?
নাহ, তেমন কোনও সুনির্দিষ্ট ইতিহাস এর নেই। মনে করা হয়, কর্তৃপক্ষের শাসনে অতিষ্ঠ মানুষ কোনও এক সময়ে দিনটির সূচনা করেন।
সেই ছোট্টবেলা থেকে শুরু হয়। কী করবে, কী ভাবে করবে, সব বলে দেওয়া হয় মানুষকে। মনে করা হয়, চক্রটির সূচনা বাবা-মায়ের হাত ধরে। তারপরে শিক্ষক-শিক্ষিকা। তারপরে বস। অনেকের মতে এর মধ্যে অনেক নিয়মই জরুরি। তবে বেশ কিছু রয়েছে নেহাতই ক্ষমতা দেখানোর স্বার্থে।
এই সূক্ষ্ম ফারাকটা বুঝলেই আজকের দিনের তাৎপর্য অনেকখানি পরিষ্কার হবে। ওই যে গোড়াতেই বলা হলো, অবাধ্যতার সঙ্গে একে মিলিয়ে ফেললে চলবে না। অবাধ্য হয়ে সমাজে নৈরাজ্য, অরাজকতা সৃষ্টি এর লক্ষ্য নয়। বরং অতিরিক্ত নিয়মের বেড়াজালের হাঁসফাঁস অবস্থা থেকে মুক্তি খোঁজাই এর লক্ষ্য।
সকলের জন্যও নয়। যাঁদের হাতে-পায়ে নানা নিগড়ের বেড়ি, তাঁদেরও তো একটু মুক্তি চাই। আইন ভাঙা নয়। বরং নিয়মের চোখরাঙানি থেকে একটু মুক্তি।
এক বেলা পড়া থেকে ছুটি, হেঁসেলে নিত্য পাঁচ পদের জায়গায় দু’পদ বা বসের মুখ ঝামটার পাল্টা একটু রুখে দাঁড়ানো। অন্যায় কি? একটা দিন নিজের মতো এটুকু শ্বাস ও সম্মান তো মানুষের প্রাপ্য হতেই পারে।
আর করোনার এই দীর্ঘ ক্লান্তিকর সময়ে খোলা বাতাস তো অবশ্যই চাই। অফিসে সহকর্মীদের মাঝে বসে কাজ আর বাড়িতে বসে সেই কাজের মধ্যেই রয়েছে বিস্তর ফারাক। তাতে বাড়ির লোকের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটানো গেলেও সময় ও কাজের চাপ বেড়েছে।
ওয়ার্ক ফ্রম হোম সম্পর্কে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের এক কর্মী বলেন, ‘এখন অনেক সময় গভীর রাতেও প্রয়োজন হলে কাজে বসতে হচ্ছে। সব রুটিন ওলটপালট হয়ে গিয়েছে।’ অনেকের মতে, এই পরিস্থিতিতে আজকের দিনে বসরাও খানিক আগল আলগা করতে পারেন। দেখুন না, একটু ছাড় দিয়ে, অমান্যের দৌড় কতখানি হয়।
নিয়মের রাজত্বে কিছু ‘অনিয়মে’র খোঁজে আজ ‘ডিজওবিডিয়েন্স ডে’
