কলকাতা: প্রেসিডেন্সি জেলেই সোমবার রাতটা কাটালেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম, বিধায়ক মদন মিত্র এবং প্রাক্তন মেয়র ও বর্তমানে দলত্যাগী শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার সময়ে উপস্থিত ছিলেন চার নেতার বাড়ির লোকই। অসুস্থ বোধ করায় মঙ্গলবার ভোর চারটে নাগাদ শোভন ও মদনকে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রুটিন চেক আপের জন্য বেলার দিকে নিয়ে যাওয়া হয় সুব্রত, ফিরহাদকেও। তাঁরা আপাতত প্রেসিডেন্সি জেলের ভিআইপি ওয়ার্ডে আছেন।
মদন সম্প্রতি অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর করোনা হয়েছিল। তার উপরে করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত রাজ্যে কার্যত লকডাউন চলছে। এই পরিস্থিতিতে আচমকা পাঁচ বছর আগের নারদ মামলায় গ্রেপ্তারিতে এই তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তো উঠেইছে। সেই সঙ্গে, ওই একই মামলায় মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীর জড়িত থাকার অভিযোগ সত্ত্বেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শিবির বদলে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নাম লেখানোর জেরে এই ‘সুবিধা’ বলে জোর জল্পনা। শুভেন্দু তো বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হয়েছেন।
সোমবার রাতে এই বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া বিধায়ক মদনও। তাঁর কথায়, ‘আমরা সব দুষ্টু লোক। কিন্তু মুকুল আর শুভেন্দু নয়।’ সিবিআইয়ের অবশ্য দাবি, মুকুলের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই। কিন্তু শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন, সে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ ম্যাথু স্যামুয়েল, যিনি নারদ ভিডিয়োটি করেছিলেন।
সোমবার নিজাম প্যালেসের বাইরে ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেলেন মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ। এই সঙ্কটের সময়ে তিনি মানুষের পাশে থাকতে পারছেন না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘বিচারব্যবস্থার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। বিজেপি যাকে খুশি ব্যবহার করে আমাকে হেনস্থা করতে পারে।’
অন্যদিকে, শোভন ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখীর অভিযোগ, সোমবার সকালে সটান তাঁদের শোওয়ার ঘরে ঢুকে পড়েন সিবিআই আধিকারিকরা। প্রাক্তন মেয়রের কথায়, ‘আমি ডাকাত নই। এমন কোনও অন্যায় করিনি যে আমাকে গ্রেপ্তার করতে একেবারে শোওয়ার ঘরে ঢুকে পড়তে হবে।’
‘আমরা দুষ্টু লোক, মুকুল শুভেন্দু নয়’, প্রতিক্রিয়া মদন মিত্রর

অসুস্থ হয়ে পড়ায় চার জনকেই নিয়ে আসা হয়েছে পিজিতে