কলকাতা: মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি আগেই তুলেছেন। শুক্রবার বিধানসভার অধ্যক্ষকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নিজেই টুইটে সে কথা জানিয়েছেন।
বস্তুত, মুকুলের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে সরব শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। বৃহস্পতিবারই আবেদন জানানোর প্রস্তুতি নেন তিনি। কিন্তু সে দিন বিধানসভা সচিবালয়ের চিঠিপত্র জমার বিভাগ বন্ধ ছিল। আজ, শুক্রবার অবশেষে চিঠিটি দিয়েছেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)।
পরে টুইটে লেখেন, বিজেপির টিকিটে প্রথম বার নির্বাচনে জিতেছেন মুকুল রায় (Mukul Roy)। তার পরেই দল বদলান তিনি। অথচ তার আগে কৃষ্ণনগর উত্তরের আসনটি ছাড়েননি। এ ব্যাপারে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছি। এই বেআইনি কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
Having tasted electoral success first time on a BJP ticket @MukulR_Official defected. Didn’t resign before duping the electorate of Krishnanagar Uttar Constituency.
Duly notified Hon Speaker WB Legislative Assembly @BimanBanerjee18 about the unlawful deed & sought prompt action. pic.twitter.com/kSqvor5TcX
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) June 18, 2021
গত শুক্রবার তৃণমূল ভবনে গিয়ে পুরোনো দলে ফেরেন মুকুল। তারপরেই দলত্যাগ বিরোধী আইনে সরব হন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। এ নিয়ে রাজভবনে গিয়েও দরবার করে আসেন। কিন্তু অভিজ্ঞ মহলের মতে, এতে রাজ্যপাল কেন, রাষ্ট্রপতিরও কিছু করার নেই। স্পিকারই শেষ কথা বলবেন।
এ দিকে, মুকুলকে দলে ফিরিয়ে তাঁকে ‘ঘরের ছেলে’বলে উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুলকে দলে বড় পদ দেওয়ারও পরিকল্পনা চলছে বলে খবর।
এ দিনই আবার শুভেন্দুর সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন স্বপন দাশগুপ্ত। এ বারের নির্বাচনে লড়ে পরাজিত হয়েছেন এই বিজেপি নেতা। পরে আবার রাজ্যসভায় নিজের আসনে ফিরে গিয়েছেন। যা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। কংগ্রেস অনেক প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। বিষয়টি আর এগোয়নি।
ঘটনাচক্রে, রাজ্যসভা আসন ত্যাগের প্রসঙ্গ টেনেই টুইট করেছেন স্বপন। তবে এ ক্ষেত্রে মুকুলের ইস্তফার কথা তুলেছেন প্রাক্তন এই সাংবাদিক। তিনি লেখেন — গত সপ্তাহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন মুকুল রায়। ওঁর দলবদলের পিছনে রাজনীতিই রয়েছে। রাজনীতি তার নিজস্ব পথে চলবে। কিন্তু আইন অন্য কথা বলছে। আইন অনুযায়ী, বিজেপির প্রতীকে জেতা বিধানসভা আসন ছাড়া উচিত তাঁর। ২০১৭-য় বিজেপিতে যোগের আগে মুকুলই (Mukul Roy) রাজ্যসভার পদ ছেড়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই মুকুলের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। দল বদলের পর মুকুল (Mukul Roy) নিজেই এ ব্যাপারে চিঠি লিখেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। এ বার রাজ্য সরকার তাঁকে ওয়াই ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেবে।
মুকুল বিজেপিতে ফেরার পর অনেক নেতানেত্রীই বেসুর ধরেছেন। বস্তুত নির্বাচনে ভরাডুবির পরেই অনেকে অন্য সুরে গাইছিলেন। মুকুলের পরে তা বেড়েছে। ইতিমধ্যে কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ঠিক আগে বিজেপিতে গিয়েছিলেন তিনি। আবার, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঘর বাঁচাতে বিজেপি মরিয়া। কিন্তু দিকে দিকে যে ভাবে বেসুর বাজছে, তাতে কিছু প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে।