কলকাতা: রাজ্যের ১৯টি জায়গায় পেট্রলের দাম ১০০-র গণ্ডি পেরিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের উপর কর কমানোর আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবারের চিঠিতে মমতা পেট্রল ও ডিজেলে কেন্দ্রীয় কর হ্রাসের আবেদন জানান। তিনি লেখেন — আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ, জ্বালানি তেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে কর কমিয়ে আমজনতাকে স্বস্তি দিন। দেশে বর্তমান মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা সমাধানেরও আবেদন জানান তিনি।
মমতা লেখেন — ‘আমজনতাকে প্রবল সমস্যার মধ্যে ফেলে এ ধরনের নীতি নেওয়ায় আমি চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। জ্বালানি তেলের মূল্যের এই অভূতপূর্ব বৃদ্ধির জেরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম হু হু করে বেড়েছে। উদ্বেগজনক ভাবে বহু রাজ্যে পেট্রলের খুচরো মূল্য লিটারে ১০০ টাকাও পেরিয়ে গিয়েছে।
‘আমি জেনেছি, আপনার সরকার গত ৪ মে থেকে এ পর্যন্ত আট বার পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়িয়েছে। তার মধ্যে কেবল জুন মাসেই তা বৃদ্ধি পায় ছ’বার। এক সপ্তাহে চার বার। পেট্রল ও ডিজেলের দামের এই নিষ্ঠুর বৃদ্ধি সাধারণ মানুষকে চরম সঙ্কটে ফেলেছে। এতে দেশের ঊর্ধ্বমুখী মূল্যবৃদ্ধির হার আরও বাড়ছে।’
এই প্রসঙ্গে তিনি কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্সের কথা লেখেন। জানান, তা ৬.৩০ শতাংশ বেড়েছে। ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ৩০.৮ শতাংশ। ডিম ১৫.২ শতাংশ, ফল ১২ শতাংশ বেশি দামি হয়েছে। এমনকী, এই অতিমারীর মধ্যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা সামগ্রীর দাম বেড়েছে ৮.৪৪ শতাংশ। যার অনেকখানিই পেট্রল ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বলে মমতা উল্লেখ করেছেন।
কড়া চিঠিতে মমতা জানিয়েছেন, কোভিড অতিমারীর মধ্যে ভারত সরকার ৩.৭১ লক্ষ কোটি টাকা তেল ও পেট্রোপণ্য বাবদ রেভিনিউ আয় করেছে। মোদী সরকারের আমলে যে এই ক্ষেত্র থেকে কেন্দ্রের কর সংগ্রহ ৩৭০ শতাংশ বেড়েছে, সে কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণ মানুষের হেনস্থার বিনিময়ে ২০১৪-১৫ থেকে সেন্ট্রাল এক্সাইজ ডিউটির লাগাতার বৃদ্ধিতেই এমনটা ঘটেছে। তাঁর সরকার পেট্রল ও ডিজেল, দুই জ্বালানিতেই ছাড় দিয়েছে আমজনতার কথা চিন্তা করে।
এ দিকে, মমতা যখন পেট্রল ডিজেলের দাম নিয়ে সরব। বিজেপি তখন রাজপথে নেমেছে ভুয়ো টিকাকরণ নিয়ে। এ দিন পুরসভা অভিযানের ডাক আগেই দিয়েছিল তারা। তবে যতখানি বলা হয়েছিল, আদতে তেমন জোরালো প্রতিবাদ হয়নি। শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেত নেতানেত্রীই ছিলেন অনুপস্থিত। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে মিছিল শুরু হয় বিজেপির অফিস থেকে। চাঁদনি চকেই তা আটকে দেয় পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় সায়ন্তন বসু, অগ্নিমিত্রা পল-সহ নেতা কর্মীদের।
কেন্দ্রের করেই বেড়েছে পেট্রল-ডিজেলের দর, মোদীকে কড়া চিঠি মমতার
