কলকাতা: দলীয় বৈঠকে ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখার উপরে জোর দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, শনিবার তৃণমূল ভবনে ছিল দলের বৈঠক। সেখানে প্রশাসনিক স্তরে বড়সড় রদবদলের পাশাপাশি দলকে আরও সংযত হওয়ার কথা বলেছেন মমতা।
ওয়ার্কিং কমিটির পর কোর কমিটির বৈঠক হয়। ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা জানান, দলের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করতে হবে। দলে থেকে এমন কোনও কাজ করা চলবে না যাতে কেউ আঙুল তুলতে পারে। এ ছাড়া প্রশাসনিক কাজে দলের কেউ যাতে হস্তক্ষেপ না করে, পরিষ্কার জানিয়েছেন সে কথাও।
অন্যদিকে, ফেসবুক লাইভ করা নিয়ে মদন মিত্রকে ভর্ৎসনা করেছেন বলে খবর। শুক্রবারই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়, যেখানে মদনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, কামারহাটির পুর প্রশাসক করা হলে এলাকার ভোল বদলে দেবেন তিনি। সূত্রের খবর, দলের বৈঠকে মমতা তাঁকে বলেন, নেট মাধ্যমে যখন তখন যা খুশি বলা যায় না। যদিও মদন পরে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ দিনের বৈঠকের সবচেয়ে বড় খবর অবশ্য অভিষেককে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই মমতার এই ঘুঁটি সাজানো বলে মনে করছেন অনেকে। এ বারের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে সভা করে বেড়িয়েছেন অভিষেক। জয়ের পিছনে তাঁর অনেক বড় ভূমিকা বলে মনে করা হচ্ছে। তাই এক সময়ে মুকুল রায়ের মতো বিচক্ষণ রাজনীতিক যে পদে ছিলেন, তা দেওয়া হলো অভিষেককে।
এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন এ বারের তারকা প্রার্থীরা। এ বার ভোটের আগে ‘মানুষের জন্য কাজ’ করতে রাজনীতিতে এসেছিলেন টলিউডের একঝাঁক তারকা। তাঁদের সেই বক্তব্য নিয়ে কটাক্ষ কম হয়নি। কিন্তু তা যে নেহাত কথার কথা ছিল না, অন্তত সায়নী ঘোষ ও সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় তা প্রমাণ করেছেন। আসানসোল দক্ষিণ এবং বাঁকুড়া থেকে এ বার নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন দু’জনেই। কিন্তু তারপরেও এলাকা ছাড়েননি। নিরন্তর কাজ করে চলেছেন নিজেদের পরাজিত আসনের এলাকাগুলিতেই। সম্ভবত সেই ভালো কাজেরই স্বীকৃতি পেলেন দু’জন। সায়নীকে দেওয়া হলো যুব তৃণমূল সভাপতির পদ। যা এতদিন সামলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সায়ন্তিকা হলেন রাজ্য সম্পাদক।
বাঁকুড়ায় ‘দুয়ারে ডাক্তার’ ‘দুয়ারে অক্সিজেন’ ‘কোভিড সেফ হোম’ ইত্যাদি নানা কাজ সায়ন্তিকা বাঁকুড়াবাসীর জন্য করে চলেছেন। সায়নীও করোনাকালে আসানসোলের মাটির কামড়ে পড়ে থেকেছেন। পাশে দাঁড়াচ্ছেন মানুষের।
এঁরা বাদেও এ বারে ভোটে অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন চিত্র পরিচালক রাজ্য চক্রবর্তী। তিনি অভিনেত্রী শুভশ্রীর স্বামীও। বিজেপির হেভিওয়েট নেতা, তৃণমূলত্যাগী অর্জুন সিংয়ের এলাকা ব্যারাকপুর থেকে জিতে এ বার বিধায়ক হয়েছেন রাজ। মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে এলাকা ছাড়েননি তিনি। আজ রাজ্য সাংস্কৃতিক সেলের প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তিনি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের কর্তাও।
২৪-এর ঘুঁটি সাজানো থেকে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ না-করার ডাক, বৈঠকে মাস্টারস্ট্রোক মমতার
