কলকাতা: দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তুলেছে বিজেপি। শুক্রবার সেই দাবির প্রথম শুনানি করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের দাবির সমর্থনে প্রমাণ পেশ করেন। শুনানি চলে টেনেটুনে পাঁচ মিনিট। আগামী ৩০ তারিখ ফের শুনানি হবে।
স্পিকারের সঙ্গে কথা বলে ৬৮ পৃষ্ঠার তথ্যপ্রমাণ জমা করেন শুভেন্দু। পরে সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছে বিজেপি।
শুভেন্দুর কথায়, ‘পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন মানা হয় না। অডিয়ো এবং ভিডিয়ো থেকে টুইটার পোস্ট, নানা মানুষের মন্তব্য রয়েছে। সবকিছু থেকে প্রমাণ হয় যে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করা যেতে পারে। তা সত্ত্বেও তাঁকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান করা হয়েছে। স্পিকার আইন মানছেন না। আমরা কোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি।’
মুকুলের বর্তমান অবস্থান বেশ গোলমেলে। তৃণমূল ছেড়ে ২০১৭-য় বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। পরে গেরুয়া শিবিরের জাতীয় ভাইস-প্রেসিডেন্ট হন। এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে লড়াই করেন তিনি। ভোটে জিতে বিধায়কও হন। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পরে ধীরে ধীরে বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে থাকেন মুকুল। তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা ক্রমশ জোরালো হয়।
গত ১১ জুন ছেলে শুভ্রাংশুকে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল। কিন্তু খাতায়-কলমে এখনও তিনি বিজেপির বিধায়ক। বিজেপি থেকে ইস্তফা দেননি।
এই পরিস্থিতিতেই মুকুলের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন নিয়ে সরব হয়েছেন শুভেন্দুরা। বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে গত ৯ জুলাই মুকুলকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হয়। এতে প্রবল ক্ষুব্ধ হয় বিজেপি। দলের অন্য যে ছ’জন বিধায়ককে অন্যান্য স্ট্যান্ডিং কমিটিগুলির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল, তাঁরা পদত্যাগ করেন। শুক্রবার সেই পদগুলির জন্য তৃণমূল বিধায়কদের বেছে নেন স্পিকার।
গত ১৮ জুন শুভেন্দু স্পিকারের কাছে একটি আবেদন জমা দেন। সেখানে তিনি দলত্যাগ বিরোধী আইনে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের কথা বলেন।
কোনও বিধায়কের পদ খারিজের সিদ্ধান্ত রয়েছে একমাত্র স্পিকারের। তার আগে তদন্ত, শুনানি এবং কমিটি স্থাপন — সবকিছুর সংস্থান রয়েছে। এবং এ কাজ সম্পন্ন করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমার কথা বলা নেই সংবিধানে।
এ প্রসঙ্গে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেননি। সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও এ দিনের শুনানি প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে কিছু বলতে চাননি।
পাঁচ মিনিটেই শেষ মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের প্রথম শুনানি, আদালতে যেতে পারে বিজেপি
