কলকাতা: নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে নির্বাচনের ফল নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সেই মামলা ওঠে বিচারপতি কৌশিক চন্দর বেঞ্চে। আর এ নিয়েই বেধেছে গোল। অভিযোগ, বিচারপতি চন্দ বিজেপির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তা হলে তাঁর এজলাসে নিরপেক্ষ বিচার কী করে হবে, সে প্রশ্ন উঠছে। বিরোধিতায় আজ, শুক্রবার হাইকোর্টে বিক্ষোভেও সামিল হন আইনজীবীদের একাংশ।
চুপ করে নেই তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন টুইটে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কুণালের পোস্টে দেখা যাচ্ছে, বিজেপির অনুষ্ঠানে বিচারপতি চন্দ। ডেরেকের টুইটে আবার বিচারপতি কবে বিজেপির হয়ে কোন মামলা লড়েছেন, তার তালিকা। সেই বিচারপতির এজলাসেই নন্দীগ্রাম মামলা ওঠা নেহাত সমাপতন কি না তা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন ডেরেক।
আজ, শুক্রবার কালো মাস্ক পরে, হাতে পোস্টার নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীরা। পোস্টারে লেখা — বিচারব্যবস্থার সঙ্গে রাজনীতি করবেন না। ঘটনাচক্রে শুক্রবার মামলাটি কেবল গৃহীত হয়েছে। তার শুনানি হয়নি। শুনানি হবে আগামী ২৪ জুন। মামলাকারী অর্থাৎ মমতা এ দিন আদালতে হাজির ছিলেন না। কিন্তু জন প্রতিনিধি আইন অনুযায়ী তাঁর থাকার কথা। বিচারপতি চন্দ এ দিন জানতে চান, মমতা শুনানির সময় হাজির থাকতে পারবেন কি না। মমতার আইনজীবী এস এন মুখোপাধ্যায় জানান, নিয়ম মেনেই চলা হবে।
প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামের ফল নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছেও অভিযোগ জানানো হয়েছিল। যদিও তা নাকচ করে দেয় কমিশন। এ দিকে, মামলার শুনানি পিছোলেও শুরু হয় বিক্ষোভ। তাঁদের দাবি। এই মামলা অন্য বেঞ্চে সরানো হোক। না হলে বিচার প্রক্রিয়া সম্বন্ধে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠবে।
বিজেপি নেতারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি। তবে বিজেপির লিগ্যাল সেলের সঙ্গে বিচারপতি চন্দের যোগাযোগ ছিল। তিনি কোনও পদে ছিলেন না বলে বিজেপির একাংশের দাবি।
এ ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা ঠিক নয় বলে আইনজীবীদের একাংশেরও মত। বিজেপির হয়ে কিছু মামলা লড়ে বিচারপতি চন্দ শিরোনামে আসেন। যেমন মমতার ইমাম ভাতা ঘোষণার পর দায়ের হওয়া অভিযোগ। তাতে বিজেপির তরফে আইনজীবীর জুনিয়র ছিলেন বিচারপতি চন্দ। কিন্তু বিচারপতি হওয়ার পর রাজনৈতিক মতাদর্শের কোনও প্রভাব তাঁর কাজে পড়েনি। তাই তাঁর বিরুদ্ধে আগাম অভিযোগের বিপক্ষেই কথা বলছেন অভিজ্ঞ আইনজীবীরা।
ছবি- এই ছবিই টুইট করে প্রশ্ন তোলেন ডেরেক ও কুণাল