কলকাতা: নারদ মামলায় হাইকোর্টের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি-সহ প্রবীণ বিচারপতিদের চিঠি দিলেন বিচারপতি অরিন্দম সিনহা। তাঁর মতে — ‘আমরা এখন কৌতুকের পাত্র’ হয়ে উঠেছি।
নারদ মামলাকে অন্য রাজ্যে সরানোর জন্য সিবিআইয়ের আবেদনটিকে রিট পিটিশন হিসাবে দেখানো হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। যে কারণে মামলাটি সিঙ্গল বেঞ্চে না উঠে ডিভিশন বেঞ্চে যায়। চিঠিতে বিচারপতি সিনহা লিখেছেন — হাইকোর্টের আচরণ যথাযথ হওয়া উচিত। আমরা যা করছি তা হাইকোর্টের সম্ভ্রমের সঙ্গে সা়যুজ্যপূর্ণ নয়।
গত ১৭ মে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়দের গ্রেপ্তারির পরে মামলাটিকে অন্যত্র সরানোর আবেদন জানায় সিবিআই। ভারপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলা ওঠে।
বিচারপতি সিনহার বক্তব্য, এই আবেদনের শুনানি কোনও সিঙ্গল বেঞ্চে হওয়া উচিত ছিল। কেন? কারণ ব্যাখ্যা করে বিচারপতি লেখেন — একে রিট পিটিশন হিসাবে গ্রহণ করার কারণ ছিল না। সংবিধানের সঙ্গে যুক্ত কোনও গুরুত্বপূর্ণ আইনি প্রশ্নের সঙ্গে এর যোগ না-থাকায় আবেদনটিকে রিট পিটিশন হিসাবে দেখানো নিয়ে আপত্তি বিচারপতি সিনহার।
গ্রেপ্তারির পর যে গোলমাল হয়েছিল, সে কথা আবেদনে উল্লেখ করে সিবিআই। সে কারণে মামলা অন্যত্র সরানোর আবেদন জানানো যেতে পারে। কিন্তু সেই আবেদন খোদ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ওঠা আদৌ যুক্তিযুক্ত কি না, জোরালো ভাবে সে প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি সিনহা। তা ছাড়া, ধৃত চার নেতার জামিন নিয়ে যখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও বেঞ্চের অন্য বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে মতৈক্য হয়নি, তখন মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে না পাঠিয়ে তৃতীয় আইনজীবীর মতামত জানা যেত বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন বিচারপতি সিনহা। হাইকোর্টের ভূমিকায় জনমানসে নেতাদের স্বাধীনতায় আদালতের হস্তক্ষেপের ভুল ধারণা যেতে পারে বলেও আশঙ্কা তাঁর। জরুরি পদক্ষেপ করে এই সব সমস্যা মেটানোর আহ্বান জানিয়েছএন তিনি।
এ ভাবে চিঠি দিয়ে কোনও বিচারপতির হাইকোর্টের কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা বেশ বিরল বলে আইনজ্ঞরা জানাচ্ছেন।
আমরা কৌতুকের পাত্র, হাইকোর্টের কর্মপদ্ধতি নিয়ে জোরালো চিঠি বিচারপতির
