Onlooker desk: ছ’ বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের বাতিল করা ধারাতেই দিব্যি দায়ের হচ্ছে মামলা। সোমবার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতের গোচরে আসে। তাতে তারা ‘স্তম্ভিত’ বলে জানিয়েছে। অসন্তোষও প্রকাশ করেছে।
আইটি অ্যাক্টের ৬৬এ ধারাটি ২০১৫-র ২৪ মার্চ বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট। এই ধারায় অনলাইনে ‘আপত্তিকর’ কিছু পোস্ট করলেই গ্রেপ্তার করতে পারত পুলিশ। বিতর্কিত এই ধারাকে ‘অস্পষ্ট’, ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘বাক্ স্বাধীনতার বিরোধী’ বলে চিহ্নিত করে খারিজ করে সর্বোচ্চ আদালত।
তারপরেও এ পর্যন্ত ১০০০টি মামলা এই ধারায় রুজু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতি আর নরিম্যান, কে এম জোসেফ এবং বি আর গাভাইয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, তারা এতে স্তম্ভিত। তাঁরা বলেন, ‘আমরা নোটিস জারি করব। অদ্ভুত। যা চলছে সেটা ভয়ানক।’
এ নিয়ে দু’সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছে কোর্ট।
দ্য পিপল ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ (পিইউসিএল) নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আবেদনের শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারা এই ধারায় মামলা দায়ের করার বিপক্ষেই কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে।
আবেদনকারীর পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী সঞ্জয় পারিখ। আদালতে তিনি বলেন, ‘দেখুন কী ভাবে এই মামলা বেড়েছে। মানুষ প্রবল হেনস্থা হচ্ছে।’ এ সংক্রান্ত এফআইআর এবং আদালতে বকেয়া মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপের আবেদন জানান তিনি।
সঞ্জয় জানান, ধারা খারিজের আগে ২২৯টি মামলা বকেয়া ছিল। খারিজ হওয়ার পরেও ১৩০৭টি মামলা হয়েছে এই ধারায়। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে (৩৮১)। তার পরে রয়েছে ঝাড়খণ্ড (২৯১), উত্তর প্রদেশ (২৪৫) এবং রাজস্থান (১৯২)।
অন্ধ্র প্রদেশ, অসম, দিল্লি, কর্নাটক, তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ু ও পশ্চিমবঙ্গেও এই ধারায় মামলা রয়েছে।
২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ধারা খারিজের নির্দেশের কপি প্রত্যেক জেলা কোর্টে পাঠাতে হবে। হাইকোর্ট মারফতই এ কাজ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের কথাও তুলে ধরেন সঞ্জয়। রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কাছেও নির্দেশ পাঠাতে বলা হয়।
কেন্দ্রের তরফে সওয়াল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল। তিনি বলেন, ‘খারিজ হলেও ৬৬এ ধারাটি আইনে রয়েছে। পুলিশ কোনও মামলা রেজিস্টার করতে চাইলে এই ধারা দিতেই পারে। শুধু একটি ফুটনোট রয়েছে যে সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করেছে।’
বাতিল করা ধারায় দিব্যি দায়ের হচ্ছে মামলা, রিপোর্ট চাইল ‘স্তম্ভিত’ সুপ্রিম কোর্ট

সুপ্রিম কোর্ট