Onlooker desk: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল গোটা দেশ। সেই সূত্রে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে দাঙ্গা (delhi riots) পরিস্থিতি তৈরি হয় দিল্লিতে। ওই ঘটনায় ধৃত তিন জনকে মঙ্গলবার জামিনে মুক্তি দিল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi Hight Court)। পাশাপাশি আদালত জানিয়েছে, সংবিধানে স্বীকৃত আন্দোলনের অধিকার এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ এক নয়।
এ দিন জামিনে (bail) মুক্ত তিন জন হলেন নাতাশা নারওয়াল, দেবাঙ্গনা কলিতা এবং আসিফ ইকবাল তানহা। নাতাশা ও দেবাঙ্গনা মহিলাদের অধিকারের দাবিতে আন্দোলনকারী গোষ্ঠী ‘পিঞ্জরা তোড়’-এর সদস্য। আসিফ জামিলা মিলিয়া ইসলামিয়ার ছাত্র। গত বছর মে মাসে গ্রেপ্তার করে ইউএপিএ আইনে মামলা করা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। ট্রায়াল কোর্ট এঁদের জামিন নাকচ করে দেয়।
আজ, মঙ্গলবার সকালে দিল্লি হাইকোর্টের (Delhi Hight Court) দুই বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল এবং অনুপ জয়রাম ভম্ভানির বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। তাঁরা ট্রায়াল কোর্টের রায় খারিজ করেন। তিনজনকেই ৫০ হাজার টাকা করে ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেন। এ ছাড়া পাসপোর্ট জমা রাখা, বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত না-হওয়া ও তদন্তে বাধা না-দেওয়ার কথা জানিয়ে মুচলেকা দিতে হবে।
কোর্টের পর্যবেক্ষণ — সব দেখে মনে হচ্ছে যে কোনও বিরোধী স্বর রোধে রাষ্ট্র মরিয়া। এতটাই যে সংবিধানে স্বীকৃত আন্দোলনের অধিকার ও সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের ফারাকও মুছে গিয়েছে তাদের কাছে। এই মানসিকতাকে সমর্থন করলে তা হবে গণতন্ত্রের দুঃখজনক দিন।
গত বছর মে মাসে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয় নাতাশা ও দেবাঙ্গনাকে। দিল্লির জাফরাবাদে দাঙ্গা লাগানোর অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। সে সময় আদালত বলেছিল, পুলিসের দাবি মতো কোনও ভিডিয়োয় নাতাশাকে হিংসায় উস্কানি দিতে দেখা যাচ্ছে না। জামিন দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তার পরদিনই ফের গ্রেপ্তার করা হয় নাতাশাকে। সেই থেকে তিনি জেলে। গত মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান তাঁর বাবা মহাবীর নারওয়াল।
মহাবীর সিপিএমের প্রবীণ নেতা ছিলেন। তাঁর শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার জন্য তিন সপ্তাহের অন্তর্বর্তী জামিন পান নাতাশা। তিনি এবং দেবাঙ্গনা পিঞ্জরা তোড় সংগঠনের সদস্য। অন্যদিকে, পড়াশোনা ও পরীক্ষার জন্য এ মাসের গোড়ায় অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয় জামিয়ার ছাত্র আসিফকে। তবে তাঁকে আগামী ২৬ জুন জেলে ফেরত যেতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে দাঙ্গার চক্রান্ত করার অভিযোগ। গত বছর ফেব্রুয়ারির সেই ঘটনায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যান। শ’দুয়েক মানুষ আহত হন।
আন্দোলনের অধিকার আর সন্ত্রাসবাদ এক নয়, মন্তব্য দিল্লি হাইকোর্টের
