onlooker desk: ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা বিঘ্নিত হবে বলে অভিযোগ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। এ নিয়ে আজ, বুধবার মুখ খুলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারা জানিয়েছে, গোপনীয়তা কেন, কোনও মৌলিক অধিকারই চূড়ান্ত নয়। ‘যুক্তিযুক্ত বিধিনিষেধ’ সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এখানেই থেমে থাকেনি তারা। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া আজ, বুধবার প্ল্যাটফর্মকে চিঠি লিখে কাজ কতদূর কাজ এগিয়েছে, সে সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছে। যত দ্রুত পারা যায়, সম্ভব হলে আজই জবাব দিতে বলেছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রের নতুন নিয়মের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দিল্লি হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। মেসেজের ‘উৎস’ জানাতে বলে নিয়ম জারি করেছে কেন্দ্র। এরই বিরোধী ফেসবুকের এই ইউনিট। হোয়াটসঅ্যাপের যুক্তি, তাদের প্ল্যাটফর্মের বার্তাগুলি দু’প্রান্তে ‘এনক্রিপটেড’। নতুন নিয়ম মানতে হলে এনক্রিপশন ভাঙতে হবে। ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি। সংস্থার বক্তব্য — চ্যাটের উৎস সন্ধান করা মানে প্রত্যেক ব্যবহারকারীর ফিঙ্গার প্রিন্ট রাখা। এর ফলে এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন-এর পলিসি ভঙ্গ হবে এবং মানুষের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে বলে জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ।
সংস্থার এক মুখপাত্রের কথায় — আমাদের ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা নষ্ট হয়, এমন যে কোনও নিয়মের বিরোধিতায় আমরা ক্রমাগত সিভিল সোসাইটি ও গোটা দুনিয়ার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। পাশাপাশি ভারত সরকারের সঙ্গেও কথাবার্তা চলছে যাতে মানুষকে নিরাপদে রাখা যায়।
হোয়াটসঅ্যাপের যুক্তি খারিজ করে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘ভারত সরকার দেশবাসীর গোপনীয়তার পাশাপাশি শৃঙ্খলা ও জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখার ব্যাপারেও যত্নশীল। এই দু’দিক হোয়াটসঅ্যাপ কী ভাবে বজায় রাখবে সেটা দেখার দায়িত্ব তাদের।’ পাশাপাশিই তাঁর মন্তব্য, ‘কোনও মৌলিক অধিকারই চূড়ান্ত নয়। যুক্তিযুক্ত বিধিনিষেধ মেনেই চলতে হবে সকলকে।’ কোনও মেসেজের উৎস কোথা থেকে, সে সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারা এই ‘যুক্তিযুক্ত বিধিনিষেধ’-এর একটি উদাহরণ বলে তাঁর দাবি।
কিন্তু মেসেজের উৎস সন্ধানের প্রয়োজন হচ্ছে কেন? মন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে কোনও ধরনের দুষ্কর্ম ঠেকাতে ও অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার উৎস জানতে চাওয়া হবে। এ ছাড়া বৈদেশিক নীতি লঙ্ঘন বা অশান্তি তৈরি করা কিংবা ধর্ষণ বা সেক্স ও শিশু ধর্ষণ সংক্রান্ত কোনও বিষয়ের বার্তার ক্ষেত্রেও চাইলে উৎসের সন্ধান করা হতে পারে। তবে শুরুতেই এই তথ্য চাইবে না সরকার। অন্য কোনও পথে সাফল্য না এলে প্রয়োজনীয় তদন্তের স্বার্থে অন্তিম রাস্তা হিসাবে এই তথ্য চাওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন রবিশঙ্কর।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারকে তিন মাসের সময় দিয়ে বলা হয়েছিল, ভারতে একজন কমপ্লায়্যান্স অফিসার নিয়োগ করে গ্রিভ্যান্স রেসপন্স টিম তৈরি করতে হবে। কোনও পোস্ট নিয়ে আইনি নির্দেশ দেওয়া হলে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার মুখে হোয়াটসঅ্যাপ আইনি পথে হাঁটল বলে অভিযোগ রবিশঙ্করের।