Onlooker desk: কোভিডের দৌরাত্ম্য একটু কমতে এবং বিভিন্ন রাজ্যে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হতেই শুরু হয়েছে ভ্রমণার্থীদের ঘোরাঘুরি। তার জেরে কোভিড-বিধির দফারফা।
এমন অবস্থায় কঠোর পদক্ষেপ করল মানালি প্রশাসন। হিমাচল প্রদেশে প্রচুর পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। কুলুর পুলিশ সুপার গুরুদেব শর্মা জানান, পর্যটকদের সচেতন করতে কড়া পথ ধরেছেন তাঁরা। মাস্ক না-পরলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। দিতে না-পারলে আট দিন কাটাতে হবে জেলে। গত ৭-৮ দিনে মাস্ক না-পরার জন্য পুলিশ ৩০০টি চালান কেটেছে। ৩ লক্ষ টাকা জরিমানাও আদায় হয়েছে।
জুনে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরে ৬-৭ লক্ষ পর্যটকের ভিড় জমছে হিমাচলে। শিমলা, মানালি, ধরমশালা, নারকান্দা-সহ নানা জায়গায় উপচে পড়ছে পর্যটকদের ভিড়।
পর্যটকদের গা-ছাড়া ভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকারও। এ সপ্তাহের গোড়াতেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, কোভিড-বিধি যথাযথ ভাবে মানা না-হলে কড়াকড়ি ফিরিয়ে আনা হতে পারে।
গত বছর হিমাচলে মাত্র ৩২ লক্ষ পর্যটক হাজির হয়েছিলেন। এ বছর ৩১ মে পর্যন্ত গিয়েছেন ১৩ লক্ষ পর্যটক। তবে দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর কড়াকড়ি শিথিল হতে এখনও পর্যন্ত ৬-৭ লক্ষ পর্যটকের আগমন ঘটেছে।
মানালি-সহ বিভিন্ন জায়গায় পর্যটকরা যে ভাবে ভিড় করছেন, তা যথেষ্ট ‘উদ্বেগের কারণ’ বলে মনে করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কোভিড-বিধি ভাঙা হলে যে ভাইরাস আরও দ্রুত ছড়াবে, শুক্রবার ফের সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রকের কর্তারা।
এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক ইউরো কাপের উল্লেখ করেছেন তাঁরা। ইংল্যান্ডে এমনিতেই করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। তার মধ্যে সেমিফাইনালে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ৬০ হাজার দর্শককে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। রবিবারের ফাইনালেও ৬০ হাজার দর্শকের সমাগম হওয়ার কথা।
ইংল্যান্ডে সংক্রামক করোনা ভ্যারিয়ান্টের দাপাদাপির মধ্যেই আগামী ১৯ জুলাই থেকে কড়াকড়ি প্রত্যাহার করার কথা। অথচ এ সপ্তাহেই দৈনিক ৩০ হাজার সংক্রমণের হদিস মিলেছে। জানুয়ারির পরে এই প্রথম। তা সত্ত্বেও এত দর্শক নিয়ে ইউরো আয়োজন ঘিরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। গত মঙ্গল ও বুধবারের মধ্যে দৈনিক সংক্রমণে ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে।
তার উপরে আগামী রবিবার ইউরো ফাইনাল। ৫৫ বছর বাদে কোনও বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। মাস্ক, দূরত্ববিধি লাটে তুলে তা উদযাপন করেছেন বহু ক্রীড়াপ্রেমী। এ ভাবে কার্যত করোনাকে স্বাগত জানানো হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
পাশাপাশি বাংলাদেশ, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়ার প্রসঙ্গও টেনেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কোভিড-বিধি লাটে তুলে ঘোরাঘুরির জেরে ফের সংক্রমণ বাড়ছে এই দেশগুলিতে। প্রতিবেশী বাংলাদেশে দিনে গড়ে ৯ হাজার আক্রান্তের পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে। মৃত্যুও বাড়ছে হু হু করে। আর ভারতে এখনও দ্বিতীয় ঢেউ শেষ হয়নি। তাই গাফিলতির কোনও জায়গা নেই বলে সতর্ক করেছে সরকার।
কোভিড-বিধি কার্যকরে পাঁচ হাজার জরিমানা, জেলের পথে মানালি

এই গাদাগাদি ভিড়েই বাড়ছে উদ্বেগ