Onlooker desk: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বাংলায় এআইসিসি-র প্রাক্তন পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদ কংগ্রেস ছেড়ে গেলেন বিজেপি শিবিরে। উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁর এই দলবদল কংগ্রেস শিবিরের কাছে বড় ধাক্কা।
গত বছরে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পর বছর ৪৭-এর জিতিন প্রসাদ হলেন রাহুল গান্ধীর সতীর্থদের মধ্যে দ্বিতীয় যিনি হাত ছেড়ে পদ্মবনে গেলেন। ২০১৯ থেকেই জ্যোতিরাদিত্যকে ঘিরে পার্টি ছাড়ার জল্পনা ছিল। সেই সময়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা তাঁকে দলে থেকে যাওয়ার ব্যাপারে রাজি করিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, গত ২০ বছর ধরে দলে থাকলেও কংগ্রেসের কার্যপদ্ধতি নিয়ে জিতিনের অসন্তোষ সর্বজনবিদিত। গত বছর পার্টির প্রধান সনিয়া গান্ধীকে যে ২৩ জন বিক্ষুব্ধ চিঠি লিখেছিলেন, তাঁদের অন্যতম ছিলেন জিতিন। দলের অন্দরে সামগ্রিক সংস্কার, যৌথ ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সর্বক্ষণের জন্য হাতের কাছে পাওয়া যাবে এমন নেতৃত্বের দাবি করা হয়েছিল সেই চিঠিতে। দল পথ পরিবর্তন করার কথা বলে এ জন্য একটি প্যানেল নিয়োগ করলেও বাস্তবে কিছুই বদলায়নি।
বিস্ফোরক সেই চিঠির পরে জিতিন হাতেগোনা সেই বিক্ষুব্ধ ক’জন নেতার মধ্যে ছিলেন, যাঁদের দল তখন কোনও দায়িত্ব দেয়নি। এ বার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের তরফে ভার দেওয়া হয়েছিল জিতিনকে। তাতে ভরাডুবি হয়েছে। বাংলায় দলের সঙ্গে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের জোট ঘিরে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছিলেন জিতিন। তাঁর টুইট ছিল — দল এবং দলীয় কর্মীদের স্বার্থের কথা ভেবে জোটের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। এখন সকলের হাতে হাত মিলিয়ে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করা দরকার।
উত্তর প্রদেশের ধৌরহরা কেন্দ্রের প্রাক্তন লোকসভা সাংসদ সে রাজ্যে কংগ্রেসের অন্যতম শক্তিশালী নেতাদের একজন। তাই আগামী বছরের নির্বাচনের আগে তাঁর বিজেপিতে যোগদান কংগ্রেসের পক্ষে বড়সড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
সনিয়াকে লেখা সেই বিস্ফোরক চিঠির পরে অবশ্য জিতিন-সহ ওই ২৩ নেতার বিরুদ্ধে উত্তর প্রদেশ কংগ্রেসের একটি ইউনিট সরব হয়। গান্ধী পরিবারের সঙ্গে জিতিন ও তাঁর পরিবারের সম্পর্ক যে ভালো নয়, তা-ও উল্লেখ করে ওই ইউনিট।
জিতিনের বাবা, কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা জিতেন্দ্র প্রসাদ ১৯৯৯-এ সনিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এমনকী, দলের অন্দরে সভাপতি পদের জন্য সনিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়েও দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তার তিন বছর পর, ২০০২-এ মৃত্যু হয় জিতেন্দ্রর। জিতিনের সঙ্গে অবশ্য রাহুল গান্ধীর সম্পর্ক ভালো। রাহুলের ঘনিষ্ঠ বৃত্তেই ছিলেন তিনি। মনমোহন সরকারের আমলে দু’বার মন্ত্রীও হন তিনি।
‘হাত’ ছেড়ে ‘পদ্মবনে’ জিতিন প্রসাদ, উত্তর প্রদেশে ভোটের আগে ধাক্কা কংগ্রেসে
