Onlooker desk: তিন পলাতক ব্যবসায়ীর সম্পত্তি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে ট্রান্সফার করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বিজয় মালিয়া, নীরব মোদী এবং মেহুল চোকসির ন’হাজার কোটিরও বেশি সম্পত্তি ট্রান্সফার করা হয়েছে। তিন জনের প্রতারণার কারণে যে বিপুল ক্ষতি হয়েছে, এর ফলে তা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারবে ব্যাঙ্কগুলি।
ইডি এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ১৭০ কোটি টাকার সম্পত্তি সিজ করেছে। এর মধ্যে বিদেশে রয়েছে ৯৬৯ কোটি। এই সম্পত্তির পরিমাণ ব্যাঙ্কের লোকসানের ৮০.৪৫ শতাংশ। প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টে ওই সম্পত্তি সিজ করা হয়েছে। ১৮ হাজার ১৭০ কোটির মধ্যে ৩২৯.৬৭ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর ৯০৪১.৫ কোটি ব্যাঙ্কগুলির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যা তাদের লোকসানের ৪০ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এ প্রসঙ্গে টুইট করেন। তিনি লিখেছেন — পলাতক এবং অর্থনৈতিক প্রতারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের সম্পত্তি অ্যাটাচ করে মেটানো হবে পাওনা।
তিন পলাতকই আপাতত ভিন দেশে প্রত্যর্পণ মামলা লড়ছেন। নিজের সংস্থার আড়ালে বিপুল অর্থ সরানোর অভিযোগ তিন জনের বিরুদ্ধে। তাঁদের কীর্তির জেরে ব্যাঙ্কগুলির ২২,৫৮৫.৮৩ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রথম এফআইআর করে সিবিআই। তারপরে তদন্তে নামে ইডি। দেখা যায়, তিন অভিযুক্তরই জাতীয়-আন্তর্জাতিক স্তরে লেনদেনের জাল ছড়ানো। ঋণের টাকায় বিদেশে গাদা গাদা সম্পত্তি বানিয়েছেন তাঁরা। এমনকী প্রক্সি বা ডামি ব্যবহার করেও ব্যাঙ্কের টাকা অন্যত্র পাচার করেছেন এঁরা।
তিন ‘কীর্তিমানে’র বিরুদ্ধেই তদন্ত শেষ হয়েছে। এঁদের মধ্যে নীরব মোদী ও বিজয় মালিয়া ইংল্যান্ডে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন। আর মেহুল চোকসি গিয়েছিলেন অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুদায়। তদন্ত শেষে তিন জনকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানায় সরকার।
বিজয় মালিয়ার প্রত্যর্পণের নির্দেশ দিয়েছে ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্ট। ইউকে হাই কোর্টও সেই রায় বহাল রেখেছে। ইংল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্টে এ সংক্রান্ত কোনও আবেদন তিনি করতে পারবেন না। তাই মালিয়ার প্রত্যর্পণ এক রকম নিশ্চিত।
নীরব মোদী লন্ডনের একটি জেলে বন্দি গত দু’বছর ধরে। ভারতের প্রত্যর্পণ আবেদনের ভিত্তিতেই শ্রীঘরে গিয়েছেন তিনি। তাঁকেও প্রত্যর্পণের নির্দেশ দিয়েছে ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রটস কোর্ট।
আর মেহুল চোকসির তো লম্বা গল্প। সম্প্রতি অ্যান্টিগা থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। ধরা পড়েন ডমিনিকায়। সরকারের দাবি, তিনি পালিয়া কিউবা যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আর চোকসির দাবি, তাঁকে মারধর করে অপহরণ করা হয়েছে। ঘটনা যা-ই হোক আপাতত ডমিনিকার জেলে রয়েছেন তিনি। প্রত্যর্পণ মামলা জুলাই পর্যন্ত স্থগিত।
সম্প্রতি কোর্টের নির্দেশে এসবিআইয়ের নেতৃত্বাধীন কনসর্শিয়ামকে অ্যাটাচ করা শেয়ার ট্রান্সফার করেছে ইডি। যার মূল্য ৬,৬০০ কোটি টাকা। কনসর্শিয়ামের তরফে ডেট রিকভারি ট্রাইবুনাল ৫,৮০০ কোটিতে শেয়ারগুলি বিক্রি করেছে। এ বাদেও অ্যাটাচ করা সম্পত্তি ট্রান্সফার করা হয়েছে। যার মধ্যে রিয়েল এস্টেট-সহ নানা মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে।
মালিয়া, চোকসি, নীরব মোদীর ৯০০০ কোটিরও বেশি সম্পত্তি ব্যাঙ্কগুলিকে ফেরাল ইডি
