Onlooker desk: তিন সপ্তাহে দেশে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের (Black Fungus) কেস বাড়ল ১৫০ শতাংশ। এমনিতেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। তার মধ্যে গত তিন সপ্তাহে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৩১ হাজার ২১৬ জনের শরীরে। মারা গিয়েছেন ২,১০৯ জন। কোভিড সারার পরেও অনেকে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এবং তা চিকিৎসার প্রধান ওষুধ অ্যাম্ফোটেরিসিন-বি এর অভাব এই রোগের বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এবং এ ক্ষেত্রেও দেশে সকলের উপরে রয়েছে মহারাষ্ট্র। ৭,০৫৭টি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ এবং ৬০৯টি মৃত্যুর পরিসংখ্যান নিয়ে মহারাষ্ট্রই দেশের সব রাজ্যকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। তার পরে রয়েছে গুজরাট। গুজরাটে আক্রান্ত ৫,৪১৮, মৃত ৩২৩। সংক্রমণে তৃতীয় স্থানে রাজস্থান (২৯৭৬) আর মৃত্যুর নিরিখে থার্ড কর্নাটক (১৮৮)। দেশের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার রাজ্য উত্তর প্রদেশে ১৭৪৪ জনের শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের (Black Fungus) সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। মারা গিয়েছেন ১৪২ জন। দিল্লিতে সংক্রামিত ১২০০, মৃত ১২৫। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রামিতের নিরিখে সবার শেষে ঝাড়খণ্ড (৯৬) এবং মৃত্যুর হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ (২৩)।
মহারাষ্ট্রকে এ, বি এবং সি — তিন ভাগে ভাগ করে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিং হোমে চিকিৎসার খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিকিৎসায় কোন রাজ্যের জন্য কত অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ড্রাগ বরাদ্দ করা হয়েছে, এ সপ্তাহের শুরুতেই তার হিসাব চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মহারাষ্ট্র যেহেতু সবচেয়ে বেশি সংক্রামিত, সে কারণে ওই রাজ্যে অ্যাম্ফোটেরিসিন-বি এর জোগান বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে কী করণীয়, কী করণীয় নয়, সে সম্বন্ধে কেন্দ্রের বিস্তারিত গাইডলাইন দেওয়া এবং নাগরিকদের তা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মেনে চলা উচিত বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে।
কেন্দ্র গত মাসেই সব রাজ্যকে নির্দেশ দিয়ে বলে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে (Black Fungus) মহামারী হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। বিরল কিন্তু প্রাণঘাতী এই অসুখকে মহামারী আইনে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েচে কেন্দ্র। অর্থাৎ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের প্রতিটি নিশ্চিত বা সন্দেহভাজন কেস কেন্দ্রকে জানাতে হবে।
এই অসুখকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘নিউ চ্যালেঞ্জ’ বলে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর কথায়, ‘গত ক’দিনে আমাদের সামনে উপস্থিত নতুন চ্যালেঞ্জ ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। তার মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকা জরুরি।’
এই অসুখে নাকের সামনে অংশ কালো হয়ে ওঠে বা স্বাভাবিক রং হারায়। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। বুকে ব্যথা হয়। সমস্যা দেখা দেয় শ্বাসপ্রশ্বাসে। কাশির সঙ্গে রক্ত ওঠে। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। ভারতে যেহেতু ডায়াবেটিক মানুষের সংখ্যা প্রচুর, সে কারণেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের (Black Fungus) কেস এত বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্টেরয়েডের ওভারডোজে শুরু হওয়া সংক্রমণ প্রথমে ত্বক, পরে সাইনাস-সহ মুখের অন্যান্য অংশে থাবা বসাতে পারে। অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধে একে নিয়ন্ত্রণ করা না-গেলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। সময়মতো চিকিৎসা না হলে প্রাণহানির আশঙ্কা অত্যন্ত বেশি।
তিন সপ্তাহে ১৫০ গুণ বেড়ে দেশে মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস
