Onlooker desk: আগ্রার সেই হাসপাতাল বন্ধ করল জেলা প্রশাসন। রোগীদের অন্যত্র সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবারই সামনে এসেছিল, শ্রী পরশ হসপিটাল নামে ওই হাসপাতালের মালিক, চিকিৎসক অরিঞ্জয় জৈনের একটি ফোন কলের অডিয়ো ক্লিপ। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, অক্সিজেনের ঘাটতি মোকাবিলায় ৫ মিনিটের জন্য হাসপাতালের অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাতে ২২ জন রোগী নীল হয়ে যান।
এমন হাড় হিম করা অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হতে হতভম্ব হয়ে পড়ে গোটা দেশ। রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন। তদন্তের নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
আজ, বুধবার আগ্রার জেলাশাসক প্রভুনারায়ণ সিং সংবাদমাধ্যমকে জানান, অডিয়ো ক্লিপের ওই ভয়েস অরিঞ্জয়েরই। এবং ওই ঘটনা ঘটে গত ২৮ এপ্রিল। জেলাশাসক জানান, গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল মোট সাত জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়।
ওই ক্লিপে শোনা যাচ্ছে, অরিঞ্জয় বলছেনন, ‘আগ্রার সবচেয়ে বড় অক্সিজেন সাপ্লায়ার মাঝরাতে জানান, অক্সিজেনের জোগান সীমিত। মুখ্যমন্ত্রীও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে পারবেন না। তাই রোগীদের ডিসচার্জ করার কথা বলা হয়। পরিস্থিতির কথা তিনি ৯৬ জন রোগীর বাড়ির লোককে জানান। কিন্তু কেউই প্রথমে নিজেদের দায়িত্বে রোগী নিয়ে যেতে চাননি। পরে কিছু পরিবারকে রাজি করানো সম্ভব হয়। তখন বললাম, বেশি চিন্তা করার দরকার নেই। কাদের অক্সিজেন ছাড়া রাখা যাবে, সেটা চিহ্নিত করা হোক। একটা মক ড্রিল করা যাক। তাতেই বোঝা যাবে অক্সিজেনের অভাবে কারা মারা যাবে, কারা যাবে না।’ এরপরেই তাঁকে বলতে শোনা যায় — সকাল সাতটা নাগাদ মক ড্রিল শুরু হয়। অক্সিজেনের জোগান শূন্যে নামিয়ে দেওয়া হয়। দেখা যায়, ২২ জন রোগী নীল হয়ে যাচ্ছে। তাদের আলাদা করে নেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন বাড়িয়েও দিই আমরা। এই ‘মক ড্রিল’ পাঁচ মিনিট ধরে চলে। এবং বাকি ৭৪ জনের পরিবারকে নিজেদের দায়িত্বে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়।
অরিঞ্জয় অবশ্য সংবাদমাধ্যমে অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেননি। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা রোগীদের অক্সিজেনের জোগান পরিমাপ করে দেখছিলাম যাতে বোঝা যায় কার কতটা অক্সিজেন দরকার। যেহেতু সকলে অক্সিজেনের ব্যবহার বুঝে করতে বলছে, তাই আমরা দেখছিলাম কোনও ক্ষেত্রে অল্প জোগানেও কাজ চালানো যেতে পারে কি না। দেখা গেল, ২২ জনের হাই-ফ্লো অক্সিজেন প্রয়োজন। প্রাণবায়ুর চিন্তায় আমাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল। তাই তার যথাযথ বণ্টনের জন্য একটা এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছিল। সর্বত্র যে বলা হচ্ছে, আমরা অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়েছিলাম, তা নয়। অক্সিজেনের মাত্রা কমালে অপূরণীয় ক্ষতি হয় না।
জেলাশাসকেরও দাবি, ২২ জন রোগী মারা গিয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠছে, সেটা ঠিক নয়। এঁদের অবস্থা এমনিতেই খারাপ ছিল। তবে গোটা ঘটনার তদন্ত হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। তদন্ত করবেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (শহর) এবং চিফ মেডিক্যাল অফিসার।
অক্সিজেন বন্ধ করে ‘মক ড্রিল’, বন্ধ করা হলো আগ্রার সেই হাসপাতাল

বিতর্কের কেন্দ্রে সেই হাসপাতাল