Onlooker desk: জামিন হলো না ঠিক। তবে মুক্তি পেলেন স্ট্যান স্বামী।
এলগার পরিষদ কেসে গত বছর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ধৃত ৮৪ বছরের পূজারি-আন্দোলনকারী মারা গেলেন সোমবার। শারীরিক অসুস্থতার কারণে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। অবস্থার অত্যন্ত অবনতি হওয়ায় রবিবার ভেন্টিলেটরে রাখা হয় জেসুইট এই যাজককে। রাহুল গান্ধী, পিনারাই বিজয়ন, সীতারাম ইয়েচুরিরা তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন।
মুম্বইয়ের একটি জেলে বন্দি ছিলেন স্ট্যান স্বামী। জীবনের অন্তিম পর্বে সামান্য কিছু জিনিসের জন্যও আইনি লড়াই চালাতে হয় বৃদ্ধকে। গত ২৮ মে আদালতের নির্দেশের পর মুম্বইয়ের হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল স্ট্যানের।
পারকিনসনস অসুখ থাকায় জল খেতে গেলে গায়ে পড়ত। সে কারণে আবেদন নিবেদনের পর গত ডিসেম্বরে জেলে তাঁকে সিপার ও স্ট্র দেওয়া হয়।
গত বছর অক্টোবরে গভীর রাতে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বৃদ্ধ স্ট্যান স্বামীকে। তা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে এনআইএ। গত মাসেও তারা তাঁর জামিনের বিরোধিতা করে। এমনকী তাদের বক্তব্য ছিল, তিনি যে অসুস্থ, তার উপযুক্ত প্রমাণ নেই। এনআইএ-র দাবি, স্ট্যান স্বামী একজন মাওবাদী। তিনি দেশে অশান্তি তৈরি করতে চান।
তালোজা জেল থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ে যোগ দিয়েছিলেন স্ট্যান স্বামী। জানান, সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করা না হলে তিনি শীঘ্রই মারা যাবেন। চিকিৎসার ব্যবস্থা ও অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য বহুবার আবেদন জানিয়েছিলেন মৃত আন্দোলনকারী।
তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ-র মতো কঠোর ধারা দেওয়া হয়েছিল। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত মাসেই বম্বে হাইকোর্টে নতুন করে জামিনের আবেদন জানান স্ট্যান স্বামী।
তিনি এবং অন্য আভিযুক্তরা জানিয়েছিলেন যে তালোজা জেলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো বেহাল। কোভিডের সময়েও যথাযথ বিধি মানায় জেল কর্তৃপক্ষের অনীহার কথা জানিয়েছিলেন তাঁরা।
পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে ঝাড়খণ্ডে আদিবাসীদের জন্য কাজ করেছেন স্ট্যান। তাঁর বিরুদ্ধে নকশালদের, বিশেষত সিপিআই (মাওবাদী)-এর মতো নিষিদ্ধ সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে বলে পুলিশের অভিযোগ।
২০১৭-র ৩১ ডিসেম্বর পুনের কাছে কোরেগাঁও-ভিমায় একটি ইভেন্ট ছিল। ইভেন্টটি ছিল এলগার পরিষদের একটি বৈঠক। তারপরে এলাকায় ব্যাপক অশান্তি গোলমাল বাধে। যাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল।
তদন্তকারীদের অভিযোগ, এলগার পরিষদের ওই বৈঠকে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলা হয়। সেই ইন্ধনেই এলাকায় গোলমাল বাধে।
সেই ঘটনাতেই মামলা দায়ের হয় স্ট্যান স্বামী-সহ অনেকের বিরুদ্ধে। গত বছর রাঁচিতে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় স্ট্যান স্বামীকে। দিল্লির এনআইএ অফিসাররা গভীর রাতে বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল সে দিন। অভিযোগ, স্ট্যান স্বামীর সঙ্গে সে দিনের এলগার পরিষদ বৈঠক আয়োজকদের যোগ রয়েছে। এবং মাওবাদী ও নকশাল কার্যকলাপ ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।
বহু বিখ্যাত আন্দোলনকারী, শিক্ষাবিদ ও আইনজীবী এই মামলায় দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলে কাটাচ্ছেন। স্ট্যানই ছিলেন তাঁদের মধ্যে প্রবীণতম। গত মাসে তাঁর করোনাও ধরা পড়েছিল।
জামিন পেলেন না, শেষমেশ মৃত্যুতে চিরমুক্তি স্ট্যান স্বামীর
