Onlooker desk: চলে গেলেন দিলীপ কুমার। ৯৮-এর মহাতারকার জীবনের সঙ্গে যেন সাঙ্গ হলো বলিউডের একটা যুগ। নিজস্ব ঘরানার অভিনয়ে যার সূচনা করেছিলেন দিলীপ নিজেই।
গত বুধবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে ঊর্তি হয়েছিলেন দিলীপ। এক মাসে দ্বিতীয় বার। আর আজ, বুধবার ৯৮ বছর বয়সে সেখানেই প্রয়াণ হলো বলিউডের এই লেজেন্ডের। আজ বিকেল পাঁচটায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
জলিল পারকর নামে যে চিকিৎসক তাঁকে দেখছিলেন, তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ রোগভোগের পর সকাল সাড়ে সাতটায় মারা গিয়েছেন তিনি।’ পারিবারিক বন্ধু ফৈজল ফারুকি অভিনেতার টুইটার হ্যান্ডেলে লেখেন — অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, সকলের প্রিয় দিলীপ সাব আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ঈশ্বরই আমাদের পাঠান, তাঁর কাছেই আমরা ফিরে যাই।
দিনদুয়েক আগেই স্ত্রী সায়রা বানু টুইটারে জানিয়েছিলেন, অভিনেতার স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে। তিনি যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন, সে জন্য সকলের শুভকামনাও প্রার্থনা করেছিলেন।
১৯২২-এর ১১ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের পেশাওয়ারে কিস্সা খাওয়ানি বাজারে জন্ম দিলীপ কুমারের। আসল নাম মহম্মদু ইউসুফ খান। বাবা লালা গুলাম সারওয়ার খান ছিলেন ফল ব্যবসায়ী। পেশাওয়ারে তাঁর ফলের বাগান ছিল। কিন্তু পারিবারিক ব্যবসায় না গিয়ে দিলীপ যোগ দেন অভিনয় জগতে।
নয়া দৌড়, মুঘল-এ-আজম, দেবদাস, রাম অউর শ্যাম, আন্দাজ, মধুমতী, গঙ্গা যমুনা, সাগিনা মাহাতো — হিন্দির পাশাপাশি আঞ্চলিক ভাষাতেও স্মরণীয় বহু সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। দিলীপের ফিল্ম জীবনের শুরু ১৯৪৪ সালে। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন।
১৯৭৬-এ অভিনয় থেকে বছর পাঁচেকের বিরতি নেন। পরে ক্রান্তি (১৯৮১), শক্তি (১৯৮২), মশাল (১৯৮৪), কর্ম (১৯৮৬), সৌদাগরের (১৯৯১) মতো ছবিতে কাজ করেন। ১৯৯৮-এর কিলার পরে আর সিনেমায় অভিনয় করেননি দিলীপ কুমার।
১৯৬৬-তে অভিনেত্রী সায়রা বানুকে বিয়ে করেন। গোপী, সাগিনা মাহাতো, বৈরাগের মতো ছবিতে তাঁরা একত্রে কাজ করেছেন। পঞ্চাশ বছরের সাথীকে হারালেন সায়রা।
পদ্ম বিভূষণ, পদ্মভূষণ, দাদা সাহেব ফালকের পাশাপাশি পাকিস্তানের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান নিশান-এ-ইমতিয়াজ দেওয়া হয় দিলীপকে। ফিল্মফেয়ারে সেরা অভিনেতার প্রথম পুরস্কারটিও তাঁর ঝুলিতে। মোট আট বার এই পুরস্কার পেয়েছেন দিলীপ। শাহরুখ খান ছাড়া এই রেকর্ড আর কারও নেই।
তাঁর মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক পোস্ট আসতে থাকে। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী-সহ অনেকে শ্রদ্ধা জানান। অন্যদিকে, রাজ বব্বর, সুনীল শেঠি, সিদ্ধার্থ মালহোত্রা থেকে শিখর ধাওয়ান, সাইনা নেহওয়াল, বিভিন্ন ক্ষেত্রের নানা প্রজন্মের তারকারা সম্মান জানিয়ে পোস্ট করেন টুইটারে।