Onlooker desk: করোনা অতিমারীর তৃতীয় ঢেউ একেবারে গোড়ার দিকে রয়েছে বলে জানালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) প্রধান তেদ্রোস আধানম ঘেব্রেইউসুস। পাশাপাশি, দুনিয়া জুড়েই যে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের দাপাদাপি বাড়ছে, সে ব্যাপারেও সতর্ক করেন তিনি।
বুধবার ইমার্জেন্সি কমিটি অন কোভিড-১৯ এর বৈঠকে এ কথা জানান ঘেব্রেইউসুস। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমরা তৃতীয় ঢেউয়ের গোড়ার দিকে রয়েছি। ১১১টিরও বেশি দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়ান্ট ছড়িয়ে পড়েছে। এটিই কোভিড-১৯ এর সবচেয়ে প্রকট স্ট্রেন হিসাবে উঠে আসছে।’ তা ছাড়া, ভাইরাস ক্রমাগত ভোল বদলে আরও সংক্রামক হয়ে উঠছে বলে সতর্ক করেছেন ঘেব্রেইউসুস।
মাঝে কিছুদিন করোনা সংক্রমণের ঘটনা কমেছিল। মূলত ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় টিকাকরণের গতি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই কমছিল সংক্রমণ। কিন্তু এখন সেই ধারা উল্টোখাতে বইছে। এবং সংক্রামিতের সংখ্যা ফের বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত চার সপ্তাহ ধরে হু-এর ছ’টির মধ্যে পাঁচটি অঞ্চলেই সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী বলে দেখা গিয়েছে। এবং ১০ সপ্তাহ ধরে কমার পরে ফের বাড়তে শুরু করেছে মৃত্যুও।
সম্প্রতি সামাজিক ভাবে মেলামেশা, যাতায়াত ফের বেড়েছে। সেই সঙ্গে মাস্ক পরা-সহ অন্যান্য বিধি মানা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনীহা। এই দুই কারণে সংক্রমণ বাড়ছে বলে হু-এর মত।
সংস্থা জানিয়েছে, কোভিডের বিরুদ্ধে কেবল টিকাকরণেই ভরসা রাখা ঠিক নয়। পাশাপাশি দেশগুলিকে ভিড় এড়ানো-সহ বিধি মেনে চলায় যথাযথ পদক্ষপ করতে হবে।
ঘেব্রেইউসুসের কথায়, ‘আন্তর্জাতিক ভাবে টিকার বণ্টনে প্রবল বৈষম্য রয়েছে। যে কারণে এক একটি দেশ এক এক রকম ভাবে অতিমারীর মোকাবিলা করছে।’ তাঁর মতে, এর ফলে ‘টু-ট্র্যাক প্যানডেমিক’ দেখা দিয়েছে। একটি ট্র্যাকে রয়েছে সেই সব দেশ, যাদের কাছে টিকার পর্যাপ্ত জোগান রয়েছে। তারা বিধিনিষেধ-কড়াকড়ি তুলে নিচ্ছে।
দ্বিতীয় ট্র্যাকে রয়েছে সেই দেশগুলি, যেখানে টিকার ঘাটতি আছে। এই সব দেশ ‘ভাইরাসের দয়ায়’ বাঁচতে বাধ্য হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন হু-প্রধান।
বিশ্বজুড়েই পর্যাপ্ত কোভিড-টিকা জোগানের ব্যবস্থা করতে হবে। ভাইরাস মোকাবিলায় কী ভাবে টিকাকরণ নিয়ে এগোনো দরকার, তার রোডম্যাপও তৈরি করে দিয়েছে হু। তারা জানিয়েছে, প্রত্যেক দেশের অন্তত ১০ শতাংশ নাগরিককে সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকা দিতে হবে। এ বছরের মধ্যে ৪০ শতাংশকে এবং ২০২২-এর মাঝামাঝির ভিতরে ৭০ শতাংশ বাসিন্দার টিকাকরণ সম্পন্ন করতে হবে দেশগুলিকে।
ভারতেও কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা ওঠানামা করছে। মাঝে ক’দিন তা একটু কমেছিল। বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ফের ৪১ হাজার ৮০৬ জনের শরীরে সংক্রমণের হদিস মেলে। মারা গিয়েছেন ৫৮১ জন। এর জেরে ভারতে এ পর্যন্ত ৪ লক্ষ ১১ হাজার ৯৮৯ জনের মৃত্যু হল করোনায়।
তৃতীয় ঢেউয়ের গোড়ার পর্বে রয়েছি আমরা: সতর্ক করে জানাল হু
