Onlooker desk: ল্যানসেটের সাম্প্রতিক সমীক্ষা মোদী সরকারের জন্য বিশেষ স্বস্তিদায়ক হলো না।
সেই সমীক্ষায় আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত ও সম্মানিত এই জার্নাল জানিয়েছে, টিকার দু’টি ডোজের মধ্যে বেশিদিনের ফারাক ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে তৈরি অ্যান্টিবডিকে উদ্বেগজনক হারে কমিয়ে দিতে পারে। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি দুই ডোজের মধ্যে দিনের ফারাক ক্রমশ বাড়িয়েছে। এমনকী, কোভিশিল্ডের একটি ডোজ যথেষ্ট কি না, তা নিয়েও মাঝে কথাবার্তা শুরু হয়। টিকার আকালের জন্যই এমন সব পথ বলে জল্পনা। পাশাপাশি, ফাইজারের টিকা ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে বিশেষ কার্যকর নয় বলেও ল্যানসেট জানিয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ফাইজার টিকার একটি ডোজের পর করোনাভাইরাসের অরিজিনাল স্ট্রেনের বিরুদ্ধে ৭৯ শতাংশ মানুষের শরীরে ভালোমতো অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল। ভারতে প্রথম হদিস মেলা ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের ক্ষেত্রে সেটাই কমে ৩২ শতাংশে দাঁড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে উদ্বেগ বাড়াতে পারে দুই ডোজের মধ্যে ফারাক। এক গবেষক বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব প্রথমের পরে দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে নতুন ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো উচিত।’
ভারতে প্রথমে কোভিশিল্ডের দু’টি ডোজের মধ্যে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের ফারাক থাকলেও সেটা বাড়িয়ে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করা হয়। সরকারের দাবি ছিল, দুই ডোজের মধ্যে সময়ের ফারাক যত বাড়বে, তত তার কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পাবে। এর সমর্থনে কিছু সমীক্ষাও পেশ করা হয়। যদিও সমালোচকরা সেই যুক্তি মোটেই শোনেননি। তাঁরা বলেন, আসলে ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ত জোগান নেই বলেই এ সব বলছে সরকার। ল্যানসেটের গবেষণা কার্যত সেই সমালোচনাতেই সিলমোহর দিল।
সরকার, অন্য অনেক ক্ষেত্রের মতোই নিজেদের দাবিতে অনড় থাকে। ইংল্যান্ডের একটি সমীক্ষা তুলে ধরে তারা দেখায়, ছ’সপ্তাহের কম সময়ের ব্যবধানে দুই ডোজ দেওয়া হলে কার্যকারিতা দাঁড়ায় ৫৫.১ শতাংশে। ১২ সপ্তাহের বেশি হলে সেঠাই ৮১.৩ শতাংশে পৌঁছয় বলে তাদের দাবি। অথচ ইংল্যান্ডের ওই সমীক্ষা ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের ভিত্তিতে করা নয়। ইংল্যান্ড নিজেই ভ্যাকসিনের দুই ডোজের মধ্যে সময়ের ফারাক কমাতে উদ্যত। বিশেষত ফাইজার ভ্যাকসিন ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে পাঁচ গুণ কম কার্যকরী হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত তাদের।
ডোজের মধ্যে সময়ের ফারাক বাড়লে কার্যকারিতা কমবে ডেল্টার বিরুদ্ধে : ল্যানসেট-গবেষণা
