Onlooker desk: মাসদেড়েক ধরে তাঁদের খোঁজ মিলছিল না। মধ্য প্রদেশের একই পরিবারের নিখোঁজ সেই সদস্যদের দেহ মিলল মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। একটি মাঠের মধ্যে ৮ থেকে ১০ ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে পোঁতা হয় দেহগুলি। তার আগে গলা টিপে মারা হয় সকলকে।
আর্থ মুভার দিয়ে মাটি সরিয়ে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি মধ্য প্রদেশের দেওয়াসের।
গত ১৩ মে থেকে খোঁজ ছিল না মমতা (৪৫), তাঁর দুই মেয়ে রূপালি (২১) ও দিব্যার (১৪)। রূপালি ও দিব্যার দুই তুতো বোনও ছিল নিখোঁজ। বাড়ি থেকেই আচমকা বেপাত্তা হয়ে যায় সকলে।
মৃতদের মধ্যে রূপালির সঙ্গে বাড়িওয়ালার সম্পর্ক ছিল। সেই বাড়িওয়ালা এবং আরও অন্তত এক ডজন লোক মিলে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটিয়েছে। এমনটাই পুলিশের দাবি। মূল অভিযুক্ত সুরেন্দ্র চৌহান ও আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খোঁজ চলছে আরও সাতজনের।
মঙ্গলবার রাতে আট ফুট গর্ত খোঁড়ার পর পচন ধরা দেহগুলি উদ্ধার হয়। আলাদা আলাদা কবর খুঁড়ে পোঁতা হয় পাঁচটি দেহ। কারও শরীরে পোশাক ছিল না। অভিযুক্তরা সকলের পোশাক খুলে জ্বালিয়ে দেয়। দেহগুলির উপরে নুন ও ইউরিয়া ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। যাতে সেগুলি দ্রুত পচে যায়।
দেওয়াস পুলিশের আধিকারিক শিবদয়াল সিং বলেন, ‘সুরেন্দ্র চৌহান-সহ ছ’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রী চৌহানই। বাকিরা কবর খুঁড়ে সেগুলি পুঁতে দিতে সাহায্য করেছিল।’
পাঁচজন আচমকা বেপাত্তা হয়ে যাওয়ার পর বাড়ির লোক পুলিশে অভিযোগ জানান। এরই মধ্যে হত্যাকারীরা পুলিশকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করে। রূপালির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে নানা পোস্ট করতে থাকে তারা। সেখানে লেখা হয়, রূপালি স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন। তাঁর বোন, দুই তুতো বোন ও মা তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। সকলেই নিরাপদে আছেন।
পুলিশ রূপালির মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড ঘাঁটা শুরু করে। দেখা যায়, বাড়িওয়ালার সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলে ছিলেন তিনি। বাড়িওয়ালা সুরেন্দ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু তরুণীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে যায় সে।
পুলিশ সুরেন্দ্রর উপরে নজর রাখতে থাকে। দেখা যায়, ১৩ মে-র আগে আরও পাঁচজনের সঙ্গে ঘনঘন যোগাযোগ রেখে চলেছে সে। পাঁচ জনকে পৃথক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেই সূত্রে পুলিশ ওই মাঠের খোঁজ পায়। যেখান থেকে মঙ্গলবার দেহগুলি উদ্ধার হয়।
জানা গিয়েছে, পরিবারটির সঙ্গে সুরেন্দ্রর যথেষ্ট ভালো সম্পর্ক ছিল। রূপালির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও অন্য একজনকে বিয়ের ছক করছিল সে। রূপালি তা জানতে পেরে যান। তিনি সুরেন্দ্রর হবু স্ত্রীর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেন। এতে খেপে যায় সুরেন্দ্র।
তার ধারণা হয় রূপালি একা নন। বাকি চারজনও তাঁর বিয়ে ভাঙানোর চেষ্টায় জড়িত। তাই সকলকেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে সে।
প্রেমিকা-সহ পাঁচজনকে হত্যা করে দেহে নুন-ইউরিয়া ছড়িয়ে ৮ ফুট গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দিল ‘প্রেমিক’

কবর খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছে দেহগুলি