প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসের’ জেরে ১২৫ কোটির বেশি মূল্যের ফসলের ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমান জেলায়। গত কয়েক দিনের ঝড়-বৃষ্টির পর প্রাথমিক হিসেবে এমনটাই জানিয়েছে কৃষি দপ্তর। এছাড়া জেলায় ১৭৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থারও কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় কমবেশি ২৫ হাজার হেক্টরের মতো জমিতে, তিল চাষ হয়। তার মধ্যে বৃষ্টিতে ১২ হাজার ৮৯৮ হেক্টর জমির তিল নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ৩৭৩ হেক্টরে আখ ও ৭ হাজার ১৪২ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন আনাজ নষ্ট হয়েছে। উপ-কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘মূলত টানা বৃষ্টিতেই ফসলের ক্ষতি হল। কৃষি দপ্তরের প্রাথমিক হিসাবে সব মিলিয়ে জেলায় ১২৫ কোটি ৭৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার ফসল ক্ষতির মুখে পড়েছে। বৃষ্টি থেমে গেলে ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব করা হবে।’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ইয়াস’-এর প্রভাব মূলত পড়েছে জেলার বর্ধমান-১, গলসি-১, মেমারি-২, রায়না-২, পূর্বস্থলী-১ ও ২ ব্লকে। ঘূর্ণিঝড় এবং তার পরবর্তী প্রভাবে জেলায় ১৫ হাজারের মতো মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কৃষি ও সেচ দপ্তর সূত্রে খবর, গোটা জেলার মধ্যে জামালপুর ও মেমারি ব্লকে বৃষ্টিপাত সব থেকে বেশি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জামালপুরে ১২৬ মিলিমিটার ও মেমারিতে ১০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেচ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, জেলার নদীগুলিতে জল বাড়লেও এখন বিপদসীমার অনেকটা নীচে দিয়েই বইছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ১৪১টি খুঁটি, ১৩০টি মতো ট্রান্সফরমার-সহ অন্য বেশ কিছু বৈদুতিক সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ১কো টি ৬০ লক্ষ টাকা বলে প্রশাসন সূত্রে খবর মিলেছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘বিভিন্ন দপ্তর ও ব্লক থেকে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেই রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে। সরকারের নির্দেশ এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ইয়াসে রাজ্যের শস্যগোলায় ১২৫ কোটির বেশি ফসলের ক্ষতি
