প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: শহর বর্ধমানের পর এ বার খণ্ডঘোষের উখরিদ। পুলিশের সহযোগিতায় ঘরে ফেরার পর ফের সপরিবার ঘরছাড়া হলেন এক বিজেপি নেত্রী। দিন কয়েক আগেই বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু সোমবার তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আক্রান্ত হন তাঁর স্বামীও। শেষমেশ প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি ছেড়ে সপরিবার জেলা বিজেপি কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ওই নেত্রী। গোটা ঘটনায় আঙুল উঠেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ভোটে হেরে গিয়ে এখন শাসকদলের বদনাম করতেই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
খণ্ডঘোষের উখরিদ গ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দা রাখি রায় নামে ওই বিজেপি নেত্রীর। তিনি জানান, ভোটের সময়ে তিনি বিজেপির হয়ে কাজ করেছিলেন। সেই কারণে ভোটের ফল প্রকাশের দিনেই সপরিবার তাঁকে ঘর ছাড়া হতে হয়। বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার একটি গ্রামে তিনি ছিলেন। গত ১৮ জুন খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে সপরিবার তাঁদের উখরিদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনে। এদিন রাখি বলেন, ‘সোমবার এলাকার তৃণমূলের লোকজন ফের আমার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর চালায়। আমাকে বিবস্ত্র করে ব্যাপক মারধর করা হয়। আমার স্বামীকেও মারধর করা হয়েছে। তাই আতঙ্কে স্বামী-সন্তান নিয়ে জেলা পার্টি অফিসে আশ্রয় নিয়েছি।’
ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির আইনজীবী সেলের নেতা সুব্রত কর্মকার এদিন বলেন, ‘ভোট পরবর্তী হিংসায় গোটা রাজ্যে বিজেপির বহু কর্মী ও সমর্থক ঘরছাড়া হয়। তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। ঘরছাড়া সবাইকে ঘরে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছেন মহামান্য আদালত। সেই মতো পূর্ব বর্ধমান জেলা-সহ রাজ্যের সর্বত্র ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু পুলিশ ঘরে ফিরিয়ে দিলেও তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আক্রমন চালিয়ে ঘরে ফেরাদের ফের ঘরছাড়া করছে।’ জেলা বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে, রাখি ও তাঁর পরিবারের উপরে হওয়া নির্যাতনের রিপোর্ট তাঁরা তাঁদের দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন।
যদিও এমন অভিযোগ মানতে চাননি খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম ওরফে ফাগুন। তাঁর বক্তব্য, ‘উখরিদে মহিলা বিজেপি কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বা তাঁর বাড়িতে হামলার অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা। আসলে নির্যাতনের ঘটনার চিত্রনাট্য তৈরি করে তার ভিডিয়ো বানিয়ে বিজেপি নেতারা রাজ্যের বদনাম করতে চাইছে। পুলিশকেও চাপে রাখতে চাইছে। ভোটে জিততে না পেরে এখন বিজেপি নেতারা দলের লোকজনকে কাজে লাগিয়ে এইসব নোংরা রাজনীতির খেলা শুরু করেছে।’ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপত্র তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘কোথায় যদি এমন কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ প্রশাসনও বিষয়টি দেখছে।’
পুলিশি আশ্বাসে ঘরে ফেরা বিজেপির নেত্রীকে বিবস্ত্র করে মার, আতঙ্কে পার্টি অফিসে আশ্রয়
