শান্তিনিকেতন: কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য শিক্ষক-আধিকারিকদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। অভিযোগ, সেখানে তিনি অধ্যাপকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কটুক্তি করেন, অপমানও করেন। তাঁর সেই বক্তব্যের অডিয়ো বার্তাও সামনে আসে। যদিও তার সত্যতা Theonlooker 24X7 যাচাই করেনি। কিন্তু সেই অডিয়ো টেপকে কেন্দ্র করে মানহানির অভিযোগে বিদ্যুতের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করলেন পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক মানস মাইতি। ইমেল মারফত শান্তিনিকেতন থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ভবনের অধ্যাপক মানস মাইতি। তাঁর অভিযোগ, গত ৮ জুন একটি ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছিস। সেখানে অধ্যাপকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সংস্কার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন উপাচার্য।
সে দিনের বৈঠকে ১৮০ জন উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ, সেখানে সকলের সামনেই মানস-সহ একাধিক অধ্যাপককে অপমান করেন বিদ্যুৎ। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘অধ্যাপকেরা বাড়িতে বসে মোটা মাইনে নিচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের পড়ানোর যোগ্যতা নেই।’ এমনকী, তাঁদের বাবা-মায়েরা ঠিক ভাবে শিক্ষা দিতে পারেননি, বিদ্যুৎ এমন কথাও বলেছেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করায় আবার অনেক অধ্যাপককে বৈঠক থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে দাবি।
শান্তিনিকেতন থানায় দায়ের করা অভিযোগে অধ্যাপক মানস মাইতি লেখেন — বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মহাশয়ের এ রূপ বক্তব্য এবং এ রূপ কার্যকলাপের ফলে আমার ভীষণ ভাবে সম্মানহানি হয়েছে। তিনি সজ্ঞানে, ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাকে এবং আমার সহকর্মী অধ্যাপকদের লোকচক্ষে, সাধারণ ভাবে জনমানসে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ রূপ বক্তব্য রেখেছেন, তা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারি। শ্রী চক্রবর্তী মহাশয়ের এ রূপ বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল ইত্যাদি গণমাধ্যমে ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হয় এবং তার দরুণ আমার এবং আমার সহকর্মী সকল অধ্যাপকদের নিদারুণ সম্মানহানি হয়েছে।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০ নম্বর ধারা অনুযায়ী উপাচার্যের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন মানসের আইনজীবী। এই ধারায় দোষী সাব্যস্ত হলে দু’বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা কিংবা দুই-ই হতে পারে।
তবে এটাই প্রথম বার নয়। আগেও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ শান্তিনিকেতন থানায় দায়ের করা হয়েছে। কখনও পৌষমেলায় দোকান উচ্ছেদ ঘিরে শ্লীলতাহানি, কখনও কোভিড বিধি ভেঙে জমায়েত, কখনও অধ্যাপকদের দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
পুলিশ জানিয়েছে, তারা অভিযোগ পেয়েছে। তদন্ত হবে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করতে চাননি বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার।
মানহানি! শান্তিনিকেতন থানায় এফআইআর বিশ্বভারতীর উপাচার্যের নামে
