প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: রাজ্য জুড়ে কোভিড সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বৃহস্পতিবার একদিনে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯০০-র দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতে অবিভাবক, শিক্ষক ও পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে মে মাসে স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিল দেওয়া স্থগিত রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাল ওয়েস্ট বেঙ্গল হেডমাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান শাখা। যদিও বিষয়টি জানার পর অনেক অভিভাবক এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
গত বছর লকডাউনের সময় থেকে স্কুলগুলিতে পঠনপাঠন বন্ধ। তবে এতদিন মিড-ডে মিল চালু ছিল। শিক্ষকরা স্কুলে গিয়ে মিড-ডে মিল দিতেন। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রামণের হার চরমে পৌঁছনোয় মিড-ডে মিল বন্ধ রাখার আবেদন জানালেন প্রধান শিক্ষকদের সংগঠনের বর্ধমান শাখার সদস্যরা। আবেদনে তাঁরা জানিয়েছে, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অবস্থার কথা বিবেচনা করে চলতি মে মাসের মিড-ডে মিলের কাজ স্থগিত রাখা হোক। তাঁদের বক্তব্য, স্কুলে মিড-ডে মিল নেওয়ার জন্য অভিভাবকদের জমায়েত এই পরিস্থিতিতে ঠিক নয়। তাই শিক্ষক, অবিভাবক ও পড়ুয়াদের স্বার্থে চলতি মে মাসে মিড-ডে মিল দেওয়া আপাতত স্থগিত রাখাই শ্রেয় বলে মনে করছেন সংগঠনের সদস্য শিক্ষকরা। সংগঠনের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা বর্ধমান টাউনস্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষারকান্তি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন আগামী ১৫ দিন কোভিড সংক্রমণের হার বাড়তে পারে। অনেক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী ইতিমধ্যে ভোটের ডিউটি করেছেন। তাঁদের অনেকে কোভিড আক্রান্ত। এছাড়া ট্রেন বন্ধ থাকায় অভিভাবক, শিক্ষক অনেকেই স্কুলে আসতে পারবেন না। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মিড-ডে মিল বন্ধ রাখার আবেদন জানানো হয়েছে।’
তবে এ প্রসঙ্গে অভিভাবকদের মত ভিন্ন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্ধমানের বাসিন্দা এক অভিভাবক বলেন, ‘সেই অর্থে শিক্ষকদের এখন কোনও কাজ নেই। অথচ এই সামান্য কাজটুকু করতেও ওঁদের আপত্তি। এই খাদ্যসামগ্রী কত মানুষের উপকার হয় সেটা ওঁদের না জানারই কথা। সরকারেরও উচিত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বেতন বন্ধ রাখা বা কমিয়ে দেওয়া। অন্যান্য সরকারি দপ্তর বা বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা তাহলে কী ভাবে কাজ করছেন?’