বারুইপুর: করোনা পরবর্তী সমস্যায় প্রয়াত হলেন গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। এ বার নির্বাচনে জয় লাভের পর করোনা আক্রান্ত হন তিনি। প্রায় এক মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। স্ত্রী, দুই পুত্র ও তিন কন্যাকে রেখে গেলেন তিনি। সুন্দরবনের ভূমিপুত্র প্রবীণ এই রাজনীতিকের মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিধায়কের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ‘বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জয়ন্ত নস্করের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ রাতে কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। ২০১১ সাল থেকে একাদিক্রমে তিনবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা কেন্দ্রের বিধায়ক নির্বাচিত হন। সুন্দরবন অঞ্চলের উন্নয়নে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতে শূন্যতার সৃষ্টি হল। আমি জয়ন্ত নস্করের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
জয়ন্ত গোসাবার চুনোখালি এলাকার বগুলাখালি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর পরিবার বরাবরই জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তবে তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গী হন জয়ন্ত। সেই সময় বামেদের শক্ত ঘাঁটি গোসাবায় ধীরে ধীরে দলের সংগঠন মজবুত করেন তিনিই। পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে একাধিকবার দলের হয়ে লড়াই করেছেন। চুনোখালি গ্রাম পঞ্চায়েতে দু’বার প্রধান নির্বাচিত হন। তাঁর স্ত্রী অনিতা নস্করও পঞ্চায়েত প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। আবার গত দু’বারের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের আগেও প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন জয়ন্ত। তখন অবশ্য বাসন্তী বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে ২০১১ সালে গোসাবা বিধানসভা কন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে প্রথমবার বিধানসভায় পা রাখেন। তার পর ফিরে তাকাতে হয়নি তৃণমূলের এই দক্ষ সংগঠককে। ২০১৬-র নির্বাচনের পর ২০২১ সালের নির্বাচনেও জয়ী হন তিনি। এবার তাঁর জয়ের ব্যবধান ছিল প্রায় ২৪ হাজার। তবে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বেলভিউতে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মারণ ভাইরাসের কাছে হার মানলেন তিনি। শনিবার তাঁর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই শোকের ছায়া নেমে আসে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে। শোক প্রকাশ করেছেন তাঁর বিধাসভা এলাকার বাসিন্দারাও।
করোনা পরবর্তী সমস্যায় প্রয়াত তৃণমূলের প্রবীণ বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর
