প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান
রাজ্যের শস্যগোলা বলে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান। এই জেলার অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল ধান। আর সেই ধান নিয়েই ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন শস্যগোলার যুবক আকাশ দত্ত। এ বার আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার ডাক পেলেন তিনি।
সমগ্র এশিয়া মহাদেশ থেকে দুই কৃতী আকাশ ও বাংলাদেশের এক নাগরিক এই সুযোগ পেয়েছেন। বিশ্ব উষ্ণায়ন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আকাশ উন্নতমানের উচ্চ ফলনশীল নতুন কোনও প্রজাতির ধান আবিষ্কার করবেন। আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে শস্যগোলার কৃষক মহল।
বর্ধমান শহরের ৪ নম্বর ইছলাবাদে বাড়ি আকাশ দত্তর। তিনি বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে একটি প্রোজেক্ট জমা দিতে বলা হয়। সেই প্রোজেক্টের ভিত্তিতেই ১০০ শতাংশ স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় অ্যাট আর্বানা শ্যাম্পেনে গবেষণার ডাক পেয়েছি।’ তাঁর কথায়, ‘বর্তমান গ্লোবাল ওয়ার্মিং পরিস্থিতিতে বদলে যাওয়া আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কী ভাবে আরও উন্নতমানের উচ্চ ফলনশীল ধান উৎপাদন করা যায়, সেই লক্ষ্যেই গবেষণা চালাব।’
ধান গাছের জেনেটিক ম্যানিপুলেশনই হল আকাশের গবেষণার বিষয়। মূলত পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত হয়, এমন ধান নিয়েই তিনি গবেষণা করতে আগ্রহী। বিভিন্ন সময়ে খরা এবং অতিবৃষ্টির জন্য এ রাজ্যে প্রচুর ধান নষ্ট হয়। তার জেরে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় রাজ্যের কৃষকদের। তাই প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও যাতে চাষের কোনও অসুবিধা না হয়, চাষিরা যাতে ঠিকমতো ধান উৎপাদন করতে পারেন, সেই দিকটিও তিনি গবেষণার সময়ে মাথায় রাখবেন বলে জানান। একই সঙ্গে আকাশের বক্তব্য, গবেষণা শেষ করে তিনি নিজের দেশের মাটিতে সেই গবেষণার ফল প্রয়োগ করতে চান।
চাষিদের স্বার্থে ধান নিয়ে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে গবেষণা করবে জেনে যারপরনাই খুশি আকাশের বাবা তারাপদ দত্ত। তারাপদ বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন কৃষি দপ্তরে কর্মরত ছিলাম। শুধু তাই নয়, আমি নিজেও একজন চাষি পরিবারের সদস্য। পরিবারের চাষের জমি এখনও নিজেই চাষাবাদ করি। কৃষক পরিবারের ছেলে হয়ে আকাশ চাষিদের স্বার্থে ধান নিয়ে গবেষণা করবে জেনে ভীষণ খুশি হয়েছি।’ আকাশ আন্তর্জাতিক স্তরে ধান নিয়ে গবেষণা করতে যাচ্ছে জেনে খুশি পরিবারের অন্য সদস্যরাও।
রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘আকাশ গবেষণায় সফল হয়ে ধান চাষে নতুন কিছু দিশা দেখাতে পারবেন বলেই আমার আশা। ওঁর জন্য শুভেচ্ছা রইল।’
Theonlooker24x7.com–র সব খবরের নিয়মিত আপডেট পেতে লাইক করুন ফেসবুক পেজ ও ফলো করুন টুইটার।