বর্ধমান: প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন তরুণী। কিন্তু রেলগেট বন্ধ। দীর্ঘক্ষণ সেখানে আটকে থেকে গড়িতেই সন্তান প্রসব করলেন ওই প্রসূতি। কিন্তু তখনও গেট খোলা হয়নি। সন্তান-সহ প্রসূতিকে আরও বেশ খানিকক্ষণ আটকে থাকতে হয়।
রবিবার বেলার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান-১ ব্লকের তালিত রেলগেটে। যাকে কেন্দ্র করে রেল গেটে আটকে থাকা অন্য যাত্রী ও প্রসূতির পরিবার ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। স্থানীয়রাই তৎপর হয়ে প্রসূতিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
সেখানে মা ও শিশুকে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রসূতির পরিবার জানিয়েছে, দু’জনেই সুস্থ আছে। এ দিনের এই ঘটনার পর তালিত রেল গেটের উপরে উড়ালপুলের দাবি আরও জোরালো হয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসূতির নাম মন্দিরা দাস। বাড়ি বর্ধমান-১ ব্লকের পিলখুড়ি গ্রামে।
এ দিন সকালে মন্দিরার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। পরিবারের সদস্যরা একটি গাড়িতে করে তাঁকে নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশে রওনা হন। পথে বর্ধমান-সিউড়ি ২ (বি) জাতীয় সড়কে হলদি দে পাড়ার কাছে গাড়িতেই মহিলার প্রসব যন্ত্রণা চরমে ওঠে।
চালক গাড়িটি সেখানে কিছুক্ষণের জন্য দাঁড় করান। তারপর সেখানে থেকে হাসপাতালে যাওয়ার পথে তালিত রেলগেটে ফের গাড়ি আটকে পড়ে। কারণ ট্রেন পাশ করার জন্য রেলগেট বন্ধ। দীর্ঘক্ষণ রেলগেটে আটকে থাকায় হাসপাতাল পর্যন্ত আর অপেক্ষা করা যায়নি। গাড়িতেই সন্তানের জন্ম দেন মন্দিরা।
বেশ ক’বছর ধরে ২ (বি) জাতীয় সড়কের দু’জায়গায় রেলগেটের উপরে উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। কিন্তু এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এতে চরম দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন রোগী থেকে সাধারণ মানুষ। দীর্ঘক্ষণ রেলগেট বন্ধ থাকায় হাসপাতালে যাওয়ার পথে এলাকার এক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়েছে অতীতে।
নিত্য যানজটের যন্ত্রণা তো আছেই। এখন করোনার কারণে বেশিরভাগ ট্রেন চলাচলই বন্ধ। তার পরেও তালিতে দীর্ঘক্ষণ রেলগেট বন্ধ হয়ে থাকছে বলে স্থানীয়রা জানান।
এ ব্যাপারে পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, ‘তালিত রেল গেটে উড়ালপুল তৈরির কথা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের। তবে এখনও কেন উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয়নি, তা খোঁজ নিয়ে জেনে বলতে পারব। এই পরিস্থিতিতে কবে উড়ালপুল তৈরি হবে, কবে ভোগান্তি থেকে নিষ্কৃতি মিলবে, তার উত্তর খুঁজছেন তালিতের বাসিন্দারা।
দীর্ঘক্ষণ রেল গেটে আটকে থেকে গাড়িতেই সন্তান প্রসব তালিতে
