বর্ধমান: বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের (TMC) দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি-২ (Memari) ব্লকের পলাশন গ্রাম। দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান। তবে পরিস্থিতি এমনই ছিল যে, পুলিশ কর্মীদেরও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এদিকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতেই এলাকায় ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। ঘংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে। চলছে পুলিশি টহলদারিও। বর্ধমান দক্ষিণের এসডিপিও আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এলাকা থেকে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমারি (Memari) ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের (TMC) আব্দুল কাসেদ শেখের সঙ্গে ব্লকের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি আবু আওয়াল গোষ্ঠীর বিরোধ দীর্ঘ দিনের। বৃহস্পতিবার স্থানীয় বড়পলাশন ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রুবি খাতুন ও তাঁর স্বামী আবু আওয়ালের নেতৃত্বে এলাকায় বিজয় মিছিল বের হয়। তারই পাল্টা হিসেবে এদিন দুপুরে মেমারি (Memari) ২ পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ আবুল কাসেদের নেতৃত্বে একটি বিজয় মিছিল বের করা হয়। পলাশন গ্রাম ঘুরে মিছিলটি মির্জাপুরের দিকে যাওয়ার সময়েই তৃণমূলের (TMC) ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ থামাকে গেলে তাদেরকেও হেনস্থার শিকার হতে হয়।
বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ আবুল কাসেদের অনুগামী হিসেবে পরিচিত গোলাম আকবর চৌধুরীর অভিযোগ, ‘আমাদের বিজয় মিছিল পলাশন গ্রাম ঘুরে মির্জাপুরের দিকে এগোচ্ছিল। সেই সময়ে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী আবু আওয়াল সহ ১২-১৩ জন লাঠি, বাঁশ নিয়ে পিছন দিক থেকে পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালায়। এতে বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ আবুল কাসেদ সহ ৬-৭ জন জখম হয়েছেন।’ আবু আওয়ালের লোকজন বিজয় মিছিলে থাকা বেশ কয়েকটি টোটোও ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ আকবরের অভিযোগ।
যদিও আবু আওয়ালের অনুগামীদের অভিযোগ, বিজয় মিছিলের নামে পলাশন গ্রামে ঢুকে দলীয় কার্যালয় থেকে বের করে প্রধানের স্বামী আবু আওয়ালকে মারধর করা হয় । তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আরও কয়েক জন জখম হয়েছেন। আবু আওয়ালের শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান রুবি খাতুন বলেন, ‘পরিকল্পনা করে বিজয় মিছিল থেকে লাঠি-টাঙি নিয়ে আক্রমণ চালানো হয়েছে।’ বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ জখম থাকায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Theonlooker24x7.com–র সব খবরের নিয়মিত আপডেট পেতে লাইক করুন ফেসবুক পেজ ও ফলো করুন টুইটার।