কলকাতা: ইয়াসের তাণ্ডবে দিঘায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপর্যয় উপেক্ষা করেই তিনি মাছ ধরতে গিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। মমতা বুধবার জানান, ১৫ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। তিন লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রাজ্যের প্রায় এক কোটি বাসিন্দা। ত্রাণ কার্যে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য।
পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনাও। শুক্রবার সাগর, হিঙ্গলগঞ্জ ও দিঘা পরিদর্শনে যাবেন মমতা। আকাশপথে ঘুরে এলাকা পরিদর্শন করবেন তিনি। সঙ্গে মুখ্যমসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়েরও থাকার কথা। পরে সাগর ও দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে।

উত্তাল সমুদ্রের জল ঢুকছে কপিল মুনির আশ্রমে
আজ, বুধবার সকাল সওয়া ন’টা নাগাদ ওডিশার বালেশ্বরের কাছে ল্যান্ডফল করে ইয়াস। তবে স্থলভাগে ঢুকে সেটি শক্তি হারায়। ওডিশার উপর দিয়ে বয়ে গেলেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে কৃষিজমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। মৎস্যচাষ, পশুপালন, ফুলচাষও ক্ষতিগ্রস্ত। প্রবীণ মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘এ রকম কিছু এর আগে কোনওদিন দেখিনি।’ দিঘার একটি অপেক্ষাকৃত নিচু অঞ্চলের থানা সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়ে যায়।
ঝড়ের ল্যান্ডফলের আগে ভরা কোটালের অনেকখানি ডুবে যায় সাগর দ্বীপের কপিল মুনির আশ্রমও। বুক সমান জল দাঁড়িয়ে যায়। আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করে দেন বাসিন্দারা। মূল আশ্রমের বারান্দা ছুঁয়ে ফেলে জল। এক সময়ে মূল আশ্রমেও জল ঢুকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। জলের তোড়ে আশপাশের দোকানগুলিও ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় উদ্ধারকারী দল। কয়েকজনকে উদ্ধার করে তাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে নিয়ে যান। জলের তোড়ে আশ্রমের কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না সে ব্যাপারে খোঁজখবর করছে প্রশাসন।
আশ্রমের অদূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের বাংলো চত্বরেও জল ঢুকে পড়ে। বাংলোর সামনের রাস্তা জল বইতে দেখা যায়। বাংলোর পাঁচিলের একাংশ ভেঙে পড়ে জলের তোড়ে।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পৌনে আটটা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর।