কলকাতা: বৃষ্টি পিছু ছাড়ছে না। কয়েক দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি চলছে পাহাড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে প্রবল বৃষ্টি হয়। যার জেরে ধস নামল কার্শিয়াংয়ের রাস্তায়। তিনধরিয়ায় জাতীয় সড়কে এই ধসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
এর জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে যান চলাচল। এবং সবচেয়ে বড় কথা, এই পথে শিলিগুড়ির সঙ্গে দার্জিলিংয়ের যোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সমস্যা দেখা দিয়েছে অসুস্থদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ঘিরে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টয় ট্রেনের লাইন।
ঘটনাস্থলে পৌঁছন পূর্ত দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্তারা। পুলিশকর্মীরাও পৌঁছে যান দ্রুত। তবে ধস সারিয়ে তুলে রাস্তা সংস্কারের কাজ করতে সময় লাগবে বলে জানা গিয়েছে।
কারণ রাস্তার বড় অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা উড়ে গিয়েছে। প্রায় ৪০ মিটার জায়গা জুড়ে রাস্তায় চলে গিয়েছে ধসের কবলে। টয় ট্রেন লাইনে বড় বড় পাথর পড়ে রয়েছে। কিছু অংশ চাপা পড়ে গিয়েছে মাটির তলায়। ধসের কারণে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে গাড়ি। শিলিগুড়ি থেকে ঘুরপথে রোহিনী হয়ে কার্শিয়াং এবং দার্জিলিংয়ে পৌঁছচ্ছে গাড়ি।
রাজ্যে পৌঁছনোর পর থেকেই ধুন্ধুমার ব্যাটিং চালাচ্ছে বর্ষা। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে যথেষ্ট বৃষ্টি হচ্ছে। কলকাতাতেও টানা বৃষ্টি চলেছে। এখন অবশ্য তা কিছুটা কমেছে।
কিন্তু উত্তরবঙ্গে এখনই বৃষ্টি থেকে মুক্তি মেলার সম্ভাবনা নেই। আজ, শুক্রবারও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, আলিপুরদুয়ার, মালদহে।
যার জেরে রাস্তা সারাইয়ের কাজে আরও বেশি সময় লাগবে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতি শুরু হলেও তাতে বাধা তৈরি করতে পারে এই বৃষ্টিই। ধসে একটি বাড়িও চাপা পড়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে হতাহতের কোনও খবর এখনও নেই। প্রায় ১০ বছর বাদে জাতীয় সড়কের ওই অংশটি সারানো হয়েছিল। কিন্তু ধসে ফের ক্ষতিগ্রস্ত হলো তার বিরাট অংশ।
দক্ষিণবঙ্গে এখনই এত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও রোদের দেখা মিলেছে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৯০ শতাংশের বেশি। তাই ভ্যাপসা গরমের আশঙ্কা করছেন আবহবিদরা। আজ, শুক্রবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্র ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে মৌসুমী অক্ষরেখা বিশেষ সক্রিয় নয়। তবে ঝাড়খণ্ডের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। এ ছাড়া পাঞ্জাব থেকে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত নিম্নচাপ অক্ষরেখাও আছে। কোনওটিই অবশ্য তেমন শক্তিশালী নয়।