প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। ফল প্রকাশের দেড় মাস পরেও দলের বহু ঘরছাড়া রয়েছে বলে দাবি বিজেপির। যদিও সে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতারা। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এ সব টানাপড়েনের মধ্যেই এক মহিলা বিজেপি কর্মীর পরিবারকে দ্বিতীয়বার ঘরছাড়া করার অভিযোগ উঠল। যা নিয়ে সরগরম পূর্ব বর্ধমানের রাজনৈতিক মহল।
জানা গিয়েছে, পুলিশের সহযোগিতায় ঘরে ফিরেছিলেন ওই মহিলা বিজেপি কর্মীর পরিবারের লোকজন। ফের তাঁদের ঘরছাড়া করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের সদরঘাট এলাকায়। আক্রান্ত বিজেপি কর্মী রিনা যাদব দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে সোমবার পুরো ঘটনা জানিয়ে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করছে। এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, এমন ঘটনা দল সমর্থন করে না। তাই এমনটা হয়ে থাকলে পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
বিজেপি কর্মী রিনা যাদব জানান, বর্ধমানের সদরঘাট এলাকায় তাঁর বাড়ি। ভোটের সময়ে তিনি বিজেপি পার্টির হয়ে কাজ করেছিলেন। সেই কারণে ভোটের ফল প্রকাশের পর সপরিবার তাঁকে ঘর ছাড়া হতে হয়। দীর্ঘদিন ঘরছাড়া ছিলেন। সপ্তাহ খানেক আগে বর্ধমান থানার পুলিশ উদ্যোগ নিয়ে তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে। রবিবার ফের এলাকার তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তাঁকে মারধরের পাশাপাশি রেহায় পাননি স্বামী-সন্তানরাও। বিজেপি করার ‘অপরাধে’ সদরঘাটের বাড়াতে তাঁদের থাকা যাবে না বলে হামলাকারীরা হুমকি দেয় বলেও তাঁর অভিযোগ। এর পরেই আতঙ্কে দ্বিতীয়বার ঘরছাড়তে বাধ্য হন তিনি। ঘটনা সবিস্তার লিখিত ভাবে পুলিশ কে জানিয়েছেন রিনা যাদব।
এ বিষয়ে জেলা বিজেপির সহ সভাপতি প্রবাল রায় বলেন, ‘রাজ্যে গণতন্ত্র বলে আর কিছু নেই। পরিকল্পনা মাফিক পুলিশকে দিয়ে ঘরে ফিরিয়ে বিজেপি কর্মীদের উপরে সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে। এই ভাবে বেশি দিন চলতে পারে না। এই অত্যাচার নিয়ে বিজেপি আন্দোলনে নামবে। আমাদের রাজ্য নেতারা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে নানা মহলে দরবার করছেন।’ যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপত্র তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘গণতন্ত্র গুজরাট, উত্তরপ্রদেশে নেই। বাংলায় গণতন্ত্র আছে বলেই তৃণমূল কর্মীরাই উদ্যোগী হয়ে ঘরছাড়া বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ফিরিয়ে দিচ্ছেন। কোথায় যদি এমন কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ প্রশাসনও বিষয়টি দেখছে।’
পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ি ফিরে ফের ঘরছাড়া মহিলা বিজেপি কর্মী
