প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে পূর্ব বর্ধমান জেলার সর্বত্র বহুতলগুলিতে এ বার বাধ্যতামূলক ভাবে বজ্র-নিরোধক ব্যবস্থা রাখার উপরে জোর দেওয়া হলো।
পরপর ক’দিনের বৃষ্টিতে বজ্রপাতে রাজ্যজুড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সবেয়ে বেশি মানু, মারা গিয়েছেন জামালপুরে। সে জন্য সতর্কতামূলক বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার।
বাজ পড়ে মৃত্যুর ঘটনা রুখতে প্রশাসনের তরফে আমজনতার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই মতো জেলার পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিলি করা হচ্ছে লিফলেট।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছরই পূর্ব বর্ধমান জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা। ২০১৭ থেকে এ বছরের মে মাস পর্যন্ত বজ্রপাতে জেলায় ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি মাসে এ পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর, কালনা ও কাটোয়া মিলিয়ে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। জামালপুর ব্লকে ২০১২ সাল থেকে ২০২১ সালের বর্তমান সময় পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে বজ্রপাতে মৃতদের পরিবারের হাতে সরকারি আর্থিক ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ যাচ্ছে না জেলা প্রশাসনের।
এত বজ্রপাতের ঘটনা কেন ঘটছে, তা জানতে রাজ্যের কাছে বিশেষজ্ঞ কমিটি পাঠানোর জন্যও আবেদন জানানো হবে বলে ঠিক করেছে জেল প্রশাসন। পাশাপাশি জেলার সমস্ত পুরসভা এবং পঞ্চায়েতের কাছেও সেখানকার বহুতলগুলির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হচ্ছে। কারণ জেলা প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, কোনও বহুতল নির্মিত হওয়ার সময়ে পঞ্চায়েত কিংবা পুরসভার তরফে অগ্নি-নিরোধক ব্যবস্থা রাখার পাশাপাশি বজ্র-নিরোধক ব্যবস্থা রাখার কথাও বলা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না বলে অভিযোগ। তাই সেখানকার বহুতল ও আবাসনগুলিতে বজ্র-নিরোধক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কি না বা সে ব্যবস্থা থাকলেও তা সক্রিয় রয়েছে কি না, সে সব জানতে চাইছে জেলা প্রশাসন।
বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘বর্ধমান শহর-সহ পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও বর্তমানে বহুতল নির্মাণ হচ্ছে। যখনই কোনও বহুতল নির্মিত হয়, তখন সেই বহুতলে অগ্নি-নিরোধকের পাশাপাশি বজ্র-নিরোধক ব্যবস্থাও গ্রহণ করার জন্য বলা হয়। তা যথাযথ ভাবে মানা হয়েছে কি না, সেই বিষয়টি এ বার যাচাই করে দেখে নেওয়া হবে।’
বাজ পড়ে মৃত্যু এড়াতে বহুতলে বজ্র-নিরোধক ব্যবস্থায় জোর
