বর্ধমান: আউশগ্রামে নয়ানজুলি থেকে দেহ উদ্ধারের তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে এল একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই ঘটনায় বিহার থেকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে দু’জনকে।
দিন কয়েক আগে রাস্তার ধারে নয়ানজুলি থেকে উদ্ধার হয় এক ব্যক্তির দেহ। সাদা পোশাক দেখে প্রথমে কোভিডে মৃতের দেহ ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে আতঙ্ক ছড়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে। কিন্তু দেহ উদ্ধারে পুলিশ কাছে যেতে মৃতের দেহে ক্ষত চিহ্ন দেখা যায়। তার পরেই আউশগ্রামের বড়া চৌমাথা এলাকায় মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার তদন্ত নামে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। এবং ১৫ দিনের মধ্যে ঘটনার কিনারা করে বিহার থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। পাশাপাশি মৃতের নাম, ঠিকানাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে খুনে ব্যবহৃত একটি চারচাকা গাড়িও। সোমবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করে টি-আই প্যারেডের জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার।
পুলিশ জানিয়েছে, বিহারের সমস্তিপুর থেকে যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের নাম পারভেজ আলম ও সাইদুল রহমান। আর সাদা কুর্তা-পাজামা পরিহিত যে বক্তির দেহ উদ্ধার হয়েছিল তার নাম মহম্মদ খালিদ আনোয়ার ওরফে জুগনু। তার বাড়ি বিহারের সমস্তিপুর জেলার বিথান থানার লাধ কাপাসিয়া এলাকায়। তদন্তে মৃতের সম্পর্কেও উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানতে পারে, জুগনু ওই এলাকার বিভিন্ন ভুট্টা ব্যবসায়ীদের ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে পালিয়ে যায়। এছাড়া গাঁজা এবং অস্ত্রের কারবারের সঙ্গেও জড়িত ছিল বলে বিহার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে হঠাৎ জুগনুকে খুন করা হল কেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় জানিয়েছেন, ‘১ জুন সন্ধে ৬টা নাগাদ বড়া চৌমাথা এলাকা থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার হয়। মৃতদেহ দেখেই ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশ এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়। তারপর বিভিন্ন সূত্রে তদন্ত চালিয়ে এই সাফল্য মিলেছে।’ তিনি জানান, পুলিশ প্রথমে মৃতের ছবি নিয়ে খোঁজ খবর চালায়। এক ব্যক্তি পুলিশকে জানান, তিনি ওই ব্যক্তিকে স্থানীয় গুসকরা বিট হাউসের কাছে একটি হোটেলে দেখেছেন। এরপর তদন্তকারী দল ঘটনার আগের দিনগুলি থেকে শুরু করে ঘটনার দিন পর্যন্ত ওই বিট হাউস ও কয়রাপুর মোড়ের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। সেই ফুটেজেই একটি সন্দেহজনক গাড়ির গতিবিধি স্পষ্ট হয়। এরপর পুলিশ ঝাড়খণ্ডের দিকের পেট্রল পাম্প ও ধাবার সিসিটিভি ফুটেজ অনুসন্ধান করতে করতে বিহারের ভাগলপুরে সূত্র খুঁজে পায়। সেখানেই গাড়িটির সন্ধান মেলে। ৩১ মে ওই গাড়িটির মালিকের বর্ধমানের দিকে থাকার সম্ভাবনা জোরালো হয় পুলিশের কাছে। তদন্তকরী দল এরপর বিহারের সমস্তিপুর জেলার বিথান থানার এলাকায় অভিযান চালিয়ে গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করে। একইসঙ্গে ওই এলাকা থেকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে খুনে দুই অভিযুক্তকে।
আউশগ্রামে উদ্ধার হওয়া দেহ বিহারের গাঁজা-অস্ত্র কারবারির, ধৃত খুনে অভিযুক্ত দুই
