প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: বিভিন্ন রাজ্যগুলির মধ্যে যাতায়াত শুরু হলে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে। গত বছর আনলক পর্বের শুরু থেকে এমন আশঙ্কা করেছিলেন অনেকেই। সেই আশঙ্কা যে একেবারেই অমূলক ছিল না, তার প্রমাণ মিললো পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে।
ভিন রাজ্য থেকে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের শ্রীরামপুরের একটি ইটভাটায় কাজ করতে এসেছেন বেশ কিছু শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে ৩০ জনের এক সঙ্গে কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছে। এই ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের। যদিও ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের দাবি, করোনা আক্রান্ত ইটভাটার শ্রমিকদের শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে। কারও তেমন কোনও সমস্যা নেই। তবে ইটভাটা শ্রমিকদের থেকে সংক্রমণ যাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে স্বাস্থ্য দপ্তরের লোকজন সজাগ দৃষ্টি রেখেছেন। এক জায়গায় থাকা এতজন মানুষের একসঙ্গে কোভিড পজিটিভ ধরা পড়াটাই স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাদের কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ নৌমান শেখ বলেন, ‘ওই ইটভাটায় থাকা একজন প্রথম কোভিড পরীক্ষা করান। তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ হয়। এর পরেই বিষয়টিকে হাল্কা ভাবে না নিয়ে ব্লক হাসপাতালের মেডিক্যাল টিম পর পর দু’দিন ওই ইটভাটায় যায়। ইটভাটায় থাকা ১৬৫ জনের অ্যান্টিজেন ও আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা হয়। তাতেই ৩০ জনের কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে।’ বিএমওএইচ আরও বলেন, ‘ইটভাটার কারও শরীরে তেমন কোনও সমস্যা নেই। আক্রান্তদের সকলকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণেও রাখা হচ্ছে।’
এদিকে ইটভাটার ম্যানেজার বৈদ্যনাথ সরকার বলেন, আক্রান্তদের হালকা জ্বর ছাড়া তেমন আর কোনও উপসর্গ নেই।’ একই সঙ্গে তিনি জানান, তাঁদের ইটভাটার যে সব শ্রমিকদের কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে, তাঁদের বিভিন্ন ঘরে আলাদা আলাদা করে রাখা হয়েছে। ইটভাটার অন্য কর্মকর্তারা জানান, কোভিড অতিমারীর কারণে রাজ্য সরকারের বিধিনিষেধ জারি থাকায় এখন বাস, ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেই কারণে বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের নিজের বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়নি। তাঁরা ইট ভাটাতেই রয়েছেন। কিছু শ্রমিকের রিপোর্ট পজিটিভ আসায় কাউকেই ইটভাটার বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বাইরের কাউকেও ইটভাটার ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
ইটভাটায় কাজ করতে আসা ভিন রাজ্যের ৩০ শ্রমিক করোনা আক্রান্ত, উদ্বেগ
